অভিনেত্রী নিমরা খান। ছবি: সংগৃহীত।
চরিত্রের স্বার্থে কখনও ওজন বাড়িয়ে ফেলতে হয়, কখনও আবার ওজন ঝরিয়ে ছিপছিপে হতে হয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। মানতে হয় কড়া ডায়েট। সম্প্রতি পাকিস্তানের অভিনেত্রী নিমরা খান একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি নাকি ডায়েট করে এক সপ্তাহে ৮ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন।
নিমরা বলেন, তিনি যে ডায়েট করেছেন সেটি নাকি ভীষণ কঠিন। তিন দিন ডায়েটটি করার পর সবাই নাকি হাল ছেড়ে দেন। সাক্ষাৎকারে নিমরা বলেন, ‘‘ওজন ঝরানোর জন্য সবার আগে আপনাকে নিজের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে। সারা দিন আমি কেবল তিনটি খাবার খেতাম। ডিমের সাদা অংশ, আপেল আর গ্রিন টি থাকত আমার সারা দিনের ডায়েটে। প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর অন্তর আপেল আর দু’ঘণ্টা অন্তর অন্তর গ্রিন টি খেতাম। সকাল, বিকেল আর রাতে একই খাবার খেতাম ৭ দিন ধরে। এ ছাড়া রোজ সকালে ঈষদুষ্ণ জলে লেবু, মধু আর চিয়া বীজ মিশিয়ে খেতাম।’’
এই ধরনের ক্র্যাশ ডায়েট করা কি আদৌ ভাল?
পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া নেটমাধ্যম দেখে অনেকেই এই ধরনের ডায়েট শুরু করেন। তাঁরা কিন্তু অজান্তেই করে বসছেন মস্ত বড় ভুল। এর ফলে আপনার শরীর কিন্তু ভিতর থেকে দুর্বল হয়ে পড়ছে। কেবল তা-ই নয়, বাসা বাঁধছে রোগ-ব্যাধিও। ক্র্যাশ ডায়েটে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া হয় না, ফলে ইটিং ডিজ়অর্ডার দেখা দিতে পারে। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া কোনও ডায়েট শুরু করা একেবারেই উচিত নয়। জানেন কি, এই ক্র্যাশ ডায়েটের ফল কী ভয়ানক হতে পারে?
১) এই ডায়েটের ফলে শরীরে জলের মাত্রা ব্যাপক হারে কমে যায়। আপনি যখন প্রয়োজনের তুলনায় কম ফ্যাট খান, তখন দেহকোষ পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট পায় না। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই সে শরীরের অতিরিক্ত জল শুষে নেয়। যার ফলে গ্লাইকোজেন ভেঙে যায়। আর গ্লাইকোজেন ভাঙলেই জলশূন্যতা তৈরি হয়।
২) শরীরে বিপাকক্রিয়ার হার কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়।
৩) শরীরে শক্তি আসে ক্যালোরি থেকে। হঠাৎ করে কম ক্যালোরি খেলে শরীরের পেশির উপর প্রভাব পড়ে। পেশির শক্তি কমে আসে।
৪) ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণমাত্রা বেড়ে যায় অনেকখানি। ফলে বিষণ্ণতা, ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন ইত্যাদি হতেই পারে।
৫) শুধু তা-ই নয়, দেহে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন আর মিনারেলের অভাবে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যায়। চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও তৈরি হয়।
৬) এ ছাড়াও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। শরীরে ক্লান্তি আসে। কাজকর্মে অনীহা দেখা দেয়।
৭) এই প্রকার ডায়েটে অনিয়মিত ঋতুচক্রের সমস্যা দেখা যায়।