Screen Time Effects

ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইলে ‘রিল’ দেখলে কি রক্তচাপ বাড়ে? ক্ষতি হয় হার্টেরও, কী বলছে গবেষণা?

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সারা ক্ষণ মোবাইলে স্ক্রল করে ‘রিল’ দেখার অভ্যাস বা ডুম-স্ক্রলিংয়ের নেশা সর্বনাশা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তা যেমন একদিকে হাইপারটেনশনের কারণ হয়ে উঠছে, তেমনই হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩১
Midnight mobile scrolling could lead to hypertension and high blood pressure

রাত জেগে মোবাইলে স্ক্রলিং কতটা ক্ষতিকর, কী কী রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে? ছবি: ফ্রিপিক।

মোবাইলে আটকে চোখ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে স্ক্রল করা চলছে। মোবাইলেই মগ্ন এখনকার প্রজন্ম। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হোক, খেতে বসে বা সফরের সময়ে, ‘রিল’ বা ভিডিয়ো দেখার অভ্যাস আজকাল অধিকাংশেরই। শিশুরাও তার বাইরে নয়। আর এই অভ্যাসের হাত ধরেই ঘনাচ্ছে বিপদ। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সারা ক্ষণ মোবাইলে স্ক্রল করে ‘রিল’ দেখার অভ্যাস বা ডুম-স্ক্রলিংয়ের নেশা সর্বনাশা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তা যেমন একদিকে হাইপারটেনশনের কারণ হয়ে উঠছে, তেমনই হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Advertisement

‘আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়োলজি’ এবং ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর তথ্য বলছে, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে একটানা ‘রিল’ দেখে যাওয়া বা ভিডিয়ো গেম খেলার অভ্যাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়বে। কারণ স্ক্রিনের দিকে একটানা চোখ ও ‘রিল’ দেখে অহেতুক উত্তেজনা হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়িতে দিতে পারে। এতে মেলাটোনিন নামক হরমোনের তারতম্য দেখা দেয়। এই হরমোনই ‘স্লিপ সাইকেল’ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় এবং একযোগে চাপ পড়ে শরীরে আর মনে। এই অভ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে আপনার স্মৃতিশক্তির উপরেও। পাশাপাশি মোবাইলের নীল আলো রেটিনার ক্ষতি করে ও স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা টানা ৩-৪ ঘণ্টা মোবাইলে ভিডিয়ো দেখে বা সমাজমাধ্যমের পাতায় স্ক্রল করে কাটান, তাঁদের হৃদ্‌রোগ ও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বেশি। যাঁরা ৪ ঘণ্টারও বেশি মোবাইলের ‘রিল’ দেখতেই থাকেন, তাঁদের ভবিষ্যতে হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে।

১৯৯৮ সালে জার্মানির একটি গবেষণাতেও দাবি করা হয়েছিল, মোবাইলের ব্যবহার বেশি হলে রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। এখনকার সময়ে এই বিষয়টিই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষকেরা বলছেন, মোবাইল থেকে বেরনো তড়িৎচুম্বকীয় রশ্মি মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে একদিকে যেমন স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়, তেমনই অন্যদিকে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হতে থাকে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়তে থাকে। ফলে মনের উপর চাপও বাড়ে। মানসিক চাপ ক্রনিক হয়ে গেলে হাইপারটেনশনের সমস্যা বেড়ে যায়।

ডিজিটাল আসক্তি কাটানোর উপায় কী?

বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এমনটাই মত গবেষকদের। ফোনমুখী মনকে বশে রাখতে হলে, নানা ধরনের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।

সারা ক্ষণ বসে বা শুয়ে মোবাইল না দেখে, শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করতে পারলে ভাল হয়। রাতে শুয়ে মোবাইলে স্ক্রল না করে মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারলে মন অনেক শান্ত থাকবে। অস্থিরতা কমবে এবং মনঃসংযোগ বাড়বে।

ছোটরা এখন ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করেই বেশি আনন্দ অনুভব করছে। এমনকি, মন খারাপ হলে নেটদুনিয়াতেই সুখ খুঁজে নিতে চাইছে। সব কিছুর সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে ভার্চুয়াল জগৎ। এর থেকে অপরাধপ্রবণতাও বাড়ছে। তাই ডিজিটাল আসক্তি কাটাতে পুরনো শখগুলিকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। বই পড়া, খেলাধূলা করা, বাগান করা, রান্না করা অথবা গান শেখা, নাচ, আবৃত্তি— এগুলির মাধ্যমেই ফোনের নেশা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথটা অনেক সহজ হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন