দীর্ঘ ক্ষণ কাজের ফলে কমছে আয়ু। ছবি: সংগৃহীত
গোটা বিশ্বে একটা বড় সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয় অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করার জন্য। সম্প্রতি এমনই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন (আইএও)। ২০১৬ সালের একটি সমীক্ষার উপরে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে সেই রিপোর্ট। সেখানে দেখানো হয়েছে, অতিরিক্ত বেশি সময় কাজ করার কারণে ইস্কেমিক হার্টের রোগ এবং স্ট্রোকে মৃত্যু ঘটেছে ৭,৪৫০০০ মানুষের।
অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করার সঙ্গে মৃত্যুর সম্পর্ক নিয়ে এর আগে তেমন ভাবে গবেষণা হয়নি বলেই দাবি ‘হু’-এর। কোভিডের মাঝে বাড়ি থেকে কাজ করা যেমন বেড়েছে, তেমনই কাজের সময় বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে এই সময়ে এমন রিপোর্ট আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সম্প্রতি আর একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে, গোটা বিশ্বে অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এখন বিশ্বের ৯ শতাংশ মানুষ অতিরিক্ত সময় কাজ করে। এই প্রবণতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এই রিপোর্টের মাধ্যমে সচেতনতা বার্তা ছড়াচ্ছে ‘হু’। জানাচ্ছে, বাড়ি আর কাজের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করায় যখন হিমশিম খাচ্ছে মানুষ, তখন এ কথা মনে রাখা জরুরি যে জীবনের চেয়ে কোনও চাকরিই দামি না।
বাড়ি থেকে কাজ। ইন্টারনেট বা ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব যাঁরা পালন করছেন, তাঁদের কর্মজীবন এবং সংসারের মধ্যে কোনও সময় বিভাজনের সুযোগ থাকছে না। তাঁরা সারা দিনই কাজের মধ্যে রয়েছেন। ‘হু’-এর চিকিৎসকেদের বক্তব্য, এমন ব্যবস্থা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
‘হু’ এবং ‘আইএলও’-র সমীক্ষা বলছে, ২০০০ সাল থেকে ২০১৬-র মধ্যে বেশি ক্ষণ কাজ করার কারণে হার্টের অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৪২ শতাংশ। ওই সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে তা হার্টের জন্য ক্ষতিকর হয়। সপ্তাহে ৩৫-৪৫ ঘণ্টা যাঁরা কাজ করেন তাঁদের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতি হয় ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করা মানুষদের। তাঁদের মধ্যে ইস্কেমিক হার্টের অসুখে মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায় ১৭ শতাংশ। এবং অন্যদের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি আশঙ্কা থাকে স্ট্রোকে মৃত্যু ঘটার বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্ট।