লোকাল ট্রেনে আইবুড়ো ভাত। ছবি: সংগৃহীত।
ইদানীং বিয়ের আগে আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠানটির জাঁকজমক বেশ বেড়েছে। একটা সময় ছিল যখন হবু বর-কনেকে তাঁদের মায়েরা বিয়ের আগে শেষ বারের মতো পরিপাটি করে আইবুড়ো ভাত খাওয়াতেন। সেই অনুষ্ঠানের পরতে পরতে তাই জড়িয়ে থাকত অপত্যস্নেহ ও ভালবাসার ছোঁয়া। এখন অবশ্য ছবিটা বদলেছে। বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে অফিসের সহকর্মীরা সকলেই বর-কনেকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ান। কখনও বাড়িতে ডেকে, কখনও আবার রেস্তরাঁয় করা হয় এলাহি আয়োজন। সম্প্রতি লোকাল ট্রেনের ভিতরে এক আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান সমাজমাধ্যমে সকলের নজর কেড়েছে।
এক লাইনের লোকাল ট্রেনে দীর্ঘ দিন যাতায়াত করলে ট্রেনের বাকি যাত্রীদের সঙ্গে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে ওঠে। সম্প্রতি যেই ভিডিয়োটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে লোকাল ট্রেনের কামরার মাটিতে বসেই চলছে এক যুবকের আইবুড়ো ভাত। ভিডিয়োটি বেশ মন ছুঁয়েছে সকলের। না, সেই ভিডিয়োতে যদিও খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি আড়ম্বর ছিল না, তবে স্নেহ ও ভালবাসা ছিল ভরপুর। লোকাল ট্রেনের সহযাত্রীরা হবুবরের সামনে খুলে রেখে দিয়েছেন নিজেদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা সব খাবার। কেউ টিফিনে করে এনেছেন ভাত, কেউ মাছ। ভাত, ডাল, মাছ, মাংস, লুচি, পাঁচ রকমের ভাজা, পাঁচ রকমের মিষ্টি বাকি ছিল না কিছুই। সকলেই হবু বরকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন। ধূপ জ্বালিয়ে হবু বরকে বরণ করে নিচ্ছেন তাঁরা। আশীর্বাদ হিসাবে টাকাও তুলে দিচ্ছেন প্রিয় মানুষটির হাতে। ট্রেনে জায়গা সীমিত, তাই দরজার সামনে সরু জায়গাতেই করা হয়েছে সমস্ত আয়োজন।
রানাঘাট লোকালের নিত্যযাত্রী শুভঙ্কর দাস। এই আয়োজনের অন্যতম উদোক্তা তিনি। শুভঙ্কর আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘প্রায় বছর চারেক হল আমরা ট্রেনের মধ্যে এই ভাবেই আইবুড়ো ভাতের আয়োজন করি। যার ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে ওর নাম আকাশ হালদার। সামনেই ওর বিয়ে। নিজেদের মতো করে তাই ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা ট্রেনের কামড়াতেই ওর আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছি।’’