জগন্নাথের ভোগে থাকে বাহারি সব পদ। ছবি সৌজন্য: অন্নপূর্ণা।
রথের দিন জগন্নাথের আরাধনায় মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। রথের রশিতে টান দিয়ে এই রথযাত্রার উদ্যাপন শুরু হবে। বাংলার রথযাত্রার ইতিহাস প্রাচীন। বহু যুগ আগে থেকেই জগন্নাথের মাহাত্ম্যকে কেন্দ্র করে এমন সাংস্কৃতিক উদ্যাপন হয়ে আসছে। শ্রী চৈতন্যের সময় থেকেই বাঙালির সঙ্গে রথের যোগাযোগ আরও গাঢ় হয়েছে। ইদানীংকাল পর্যন্ত সেই যোগাযোগের ধারা অব্যাহত। জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা— আষাঢ়ের শুক্ল দ্বাদশীর দিন রথে চড়ে মাসীর বাড়ি যান এই ত্রয়ী। এটিই রথযাত্রা। সাত দিন সেখানে কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন। এই যাত্রাকে ‘গুণ্ডিচা যাত্রা’ বলে। এই রথযাত্রার ‘যাত্রা’ তো শুধু দেবতার নয়, ভক্তেরও। দেবতার প্রতি ভালবাসার টান থেকেই তো ভক্ত তাঁর রথের চাকা গড়িয়ে নিয়ে চলেন। পুরীর মন্দিরে তো বটেই, ইস্কন, মাহেশ-সহ যে সব জায়গায় রথযাত্রা পালন করা হয়, সর্বত্র ছাপ্পান্ন ভোগ অর্পণ করা হয় জগন্নাথের উদ্দেশে। ভোগে কী কী খাবার থাকে, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। রইল তেমন কয়েকটি খাবারের কথা।
খিচুড়ি
জগন্নাথের উদ্দেশে অর্পণ করা পুরীর মন্দিরের খিচুড়ি মাহাত্ম্য কমবেশি সকলেই জানেন। ডাল, চাল আর ঘি দিয়েই তৈরি করা হয় খিচুড়ি। এই ভোগ কিঞ্চিৎ পরিমাণে পাওয়ার জন্য রথের দিন বহু ভক্ত সমাগম হয় মন্দিরে।
ঝিলি
ঝিলি আসলে প্যানকেকের মতো একটি খাবার। পুরাণ পড়লে জানা যাবে, জগন্নাথ মিষ্টি খেতে ভালবাসতেন। তাই ৫৬ পদের মধ্যে অধিকাংশ খাবারই মিষ্টি। ময়দা, নারকেল কোরা, গুড়, পেস্তা দিয়ে মূলত তৈরি করা হয় ঝিলি।
সান্তুলা
আলু, বেগুন, পেঁপে, সজনে ডাঁটা, টম্যাটো দিয়ে তৈরি একটি নিরামিষ তরকারি। খিচুড়ির সঙ্গে নয়, আলাদা পদ হিসাবে ভোগের তালিকায় থাকে এই খাবার। অল্প তেলে পাঁচফোড়ন, ঘি আর কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিয়ে রান্না করা হয় সান্তুলা।
রসাবলি
ছানা দিয়ে মালপোয়ার আকারে বানিয়ে নেওয়া হয়। তার পর ডোবা তেলে সেগুলি ভেজে কেশর দুধে ভেজানো হয়। নরম হয়ে এলে উপর থেকে পেস্তা, কাজু, কিশমিশ ছড়িয়ে দিলেই রসাবলি।
মালপোয়া
রথযাত্রা উৎসবের অন্যতম ভোগ। জগন্নাথের প্রিয় খাবার। খোয়া ক্ষীর, দুধ, ময়দা, পেস্তারগুঁড়ো দিয়ে জগন্নাথের জন্য বানানো হয় মালপোয়া। রথযাত্রার দিনে একেবারে সকালের ভোগে থাকে মালপোয়া।