diamond

গবেষকদের বিশেষ অনুদান, হিরে দিতে চান মধ্যবিত্তের হাতের মুঠোয়, মোদী যখন ‘হীরকরাজ’

এমনিতে খনি থেকে পাওয়া হিরে আর গবেষণাগারে প্রস্তুত হিরের দামের বিস্তর তফাত। গবেষণাগারে তৈরি হিরের দাম ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কম। হিরে তৈরির সামগ্রীর দাম কমলে সেই দাম আরও কমবে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:০১
Nirmala Sitharaman says centre is going to encourage lab grown diamond industry.

‘গবেষক’-এর হাতে হিরে গুঁজে দিয়ে তাকে দলে টেনে নিয়েছিল গুপী-বাঘা। প্রতীকী ছবি।

বর্ষপূর্তির ‘ভরসাফুর্তি’তে হীরক রাজ্য দেখতে আসা মান্যগণ্য অতিথিদের হাতে হিরে গুঁজে দিয়েছিলেন হীরক রাজা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারও তাদের দ্বিতীয় জমানা পূর্তির আগে মধ্যবিত্ত ভারতীয়কে হিরে ‘উপহার’ দেওয়ার কথা ভেবেছেন। বুধবারের বাজেট বক্তৃতায় তেমনই ইঙ্গিত মিলল।

সংসদে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের বাজেট পড়তে পড়তে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন, দেশের গবেষণাগারে হিরে তৈরিকে উৎসাহ দিতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে—

Advertisement

১, হিরে তৈরির প্রয়োজনীয় দ্রব্যে শুল্ক কমানো হবে।

২. গবেষণাগারে হিরে তৈরির জন্যও গবেষক সংস্থাকেও দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক অনুদান। নির্মলা জানিয়েছেন, এতে হিরের ব্যাপারে ভারতের আমদানি নির্ভরতা আরও কমবে। আর নির্মলা না জানালেও যা প্রায় স্পষ্ট তা হল, হিরে তৈরির দ্রব্যে শুল্ক কমায় হিরের দামও কমবে। অর্থাৎ ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে আমজনতার হাতের নাগালে আসার কথা হিরে, হিরের গয়নারও। কিন্তু তাতেও ব্যবসা কি বাড়বে?

অর্থনীতিবিদরা বলেন, মানুষের হাতে যত টাকা থাকবে ততই দেশের উন্নতি। অর্থনীতির উন্নতি। দেশের মানুষের হাতে এই মুহূর্তে টাকার জোগানে কিছুটা হলেও ঘাটতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে হিরের দাম কমলেও সাধারণ মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

এমনিতে খনি থেকে পাওয়া হিরে আর গবেষণাগারে প্রস্তুত হিরের দামের বিস্তর তফাৎ। গবেষণাগারে তৈরি হিরের দাম ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কম। হিরে তৈরির সামগ্রীর দাম কমলে সেই দাম আরও কমবে। পাশাপাশি, নির্মলা ঘোষণা করেছেন গবেষণাগারে হিরে তৈরির পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দেশের কোনও একটি আইআইটিকে গবেষক সংস্থা হিসাবে অতিরিক্ত অনুদানও দেওয়া হবে। তার প্রভাবও পরোক্ষে পড়তে পারে হিরের দামে।

গবেষক প্রসঙ্গে আরও একবার হীরক রাজ্যের কথা মনে পড়ে যায়। হীরক রাজাও গবেষক রেখেছিলেন হিরের খনির কাজে সুবিধার জন্য। যদিও শেষে সেই গবেষকের হাতেই হিরে গুঁজে দিয়ে তাকে দলে টেনে নেয় গুপী-বাঘা এবং উদয়ন পণ্ডিতের দল।

মোদী সরকারের ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টা সে রকম নয়। গবেষণাগারে তৈরি হিরের অধিকাংশ কারখানা মূলত মোদীর রাজ্য গুজরাতের সুরতেই। আবার গোটা বিশ্বে যত গবেষণাগারের হিরে প্রস্তুত হয়, তার ৯০ শতাংশ আসে এই সুরত থেকে। গুজরাতের এই শহরে এ ধরনের ৪০০ কারখানা রয়েছে। নির্মলার ঘোষণায় সেই শিল্প নিঃসন্দেহে গতি পাবে। তবে আখেরে লাভ হবে দেশের হীরকরাজ্য, প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেরই।

আরও পড়ুন
Advertisement