পিঁপড়ের চাটনি খাবেন? —ফাইল চিত্র।
নতুন কোথাও ঘুরতে গেলে সেখানকার স্থানীয় খাবার চেখে দেখার শখ অনেকেরই আছে। বছর দুয়েক আগে সারান্ডার জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে চেখে দেখার সুযোগ হয়েছিল বিশেষ একটি খাবারের। লাল পিঁপড়ের চাটনি। নাম শুনে অনেকটা সুকুমার রায়ের ‘ছিল বেড়াল, হয়ে গেল রুমাল’-এর মতো লাগতেই পারে। তবে, ময়ূরভঞ্জ অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামের আদিবাসীদের কাছে এই চাটনি বেশ জনপ্রিয়।
স্থানীয় নাম ‘কাই’ চাটনি। নানা জায়গা থেকে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে এই পদ বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতেই পারে। কারণ, বিষাক্ত এই লাল পিঁপড়ের কামড় খেলে কী হতে পারে, তা সকলেই জানেন। কিন্তু যাঁরা এই চাটনি চেখে দেখেছেন, তাঁরা জানেন এর স্বাদ। তবে শুধু স্বাদের জন্য নয়, সেখানকার আদিবাসীদের কাছে এই খাবার পুষ্টিকরও বটে। প্রোটিন, নানা রকম ভিটামিন, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, জ়িঙ্কের মতো খনিজ রয়েছে এই খাবারে। তাই বের কাঠকুটো জোগাড় করে পেট চালানো, অপুষ্টিতে ভোগা মানুষগুলির কাছে এর চেয়ে উপাদেয় খাবার আর নেই। ওড়িশার আরও ছ’টি খাবারের সঙ্গে এটিও পেয়েছে ‘জিআই’ ট্যাগ। অনেকেই বলেন, এই চাটনি খেলে না কি রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ে। স্থানীয় হাটগুলিতে ঘোরাফেরা করলে সহজেই চাটনির খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু এই চাটনি কী ভাবে তৈরি করা হয়, তা জানেন কি?
কী ভাবে তৈরি হয় লাল পিঁপড়ের চাটনি?
গোটা বছরই এই পিঁপড়ে ময়ূরভঞ্জ এলাকায় দেখা যায়। গাছের পাতা দিয়ে তৈরি বাসায় খোঁজ মেলে এই বিশেষ প্রজাতির পিঁপড়ের। সেখান থেকেই পিঁপড়ে সংগ্রহ করে আনেন আদিবাসীরা। এর পর গাছের পাতায় লেগে থাকা ওই পিঁপড়েগুলিকে ডুবিয়ে রাখা হয় জলের মধ্যে। সেখান থেকে লার্ভা এবং ডিম আলাদা করা হয়। তার পর রসুন, তেল, জিরে, ধনের মতো হরেক রকম গুঁড়ো মশলার সঙ্গে সেগুলি বেটে তৈরি করা হয় এই ‘কাই’ চাটনি। ভাত-রুটি-পরোটার সঙ্গে খাওয়া হয় এই টক চাটনি।