তালিকা থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দিয়েছেন, শারীরিক কসরত করছেন। কিন্তু তা-ও নিয়ন্ত্রণে আসছে না বাড়তি ওজন, ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল? ফিটনেস ট্রেনার অরিজিৎ ঘোষাল বলছেন, “খাওয়ার ধরনে কিছু বদল আনা যায়। ছোটখাটো কিছু কৌশল মেনে চললে সমস্যা মিটতে পারে।”
ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে
খাবারে কার্বসের সঙ্গে প্রোটিন ও গুড ফ্যাট রাখুন। যেমন: হোল গ্রেন ব্রেড টোস্টের সঙ্গে অ্যাভোকাডো বা পিনাট বাটার, ব্রাউন রাইসের সঙ্গে গ্রিলড চিকেন খেতে পারেন।
উচ্চ ও নিম্ন গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স জাতীয় খাবার একসঙ্গে খান, যেমন: বেকড আলুর সঙ্গে টক দই, কলার সঙ্গে ওয়ালনাট ইত্যাদি।
ওটসের সঙ্গে চিয়া শিডস, বেরি জাতীয় ফল খেতে পারেন।
ডায়াবেটিক রোগীরা খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খাওয়ার আগে মেথি ভেজানো জল খেতে পারেন।
শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন মশলাও ভাল। হলুদ ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করে। দই, ওটসে দারুচিনি গুঁড়ো, চায়ে আদা ব্যবহার করতে পারেন।
ওজন কমাতে
অ্যাসিডিটি, গ্যাস, অম্বলের কারণে অনেক সময়ে ওজন কমতে চায় না। সে ক্ষেত্রে দুপুরে খাওয়ার পরে জিরে ভেজানো জল খান।
ফলের সঙ্গে বাদাম, প্রোটিন, সিডস (যেমন: আপেলের সঙ্গে পিনাট বাটার, বেরির সঙ্গে টক দই) খেতে পারেন।
কিটো কফির মতো ব্ল্যাক কফিতে ঘি বা এক্সট্রা-ভার্জিন নারকেল তেল মেশাতে পারেন। তবে সকালে কিটো কফি খেলে, পুরো দিন কিটো ডায়েট মেনে চলা জরুরি।
রক্তচাপের সমস্যায়
ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ লো ফ্যাট দুধ, দানাশস্য, কম মিষ্টি জাতীয় ফল, ডিম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওটস, কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে আমন্ড বা সয়া মিল্ক, কটেজ চিজ়ের সঙ্গে শসা, টোম্যাটো খেতে পারেন।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (যেমন: গ্রিলড স্যামন বা চিকেনের সঙ্গে পালং শাক, মিষ্টি আলু, বেকড বিনস বা টোম্যাটো, অ্যাভোকাডো, কিনোয়া) খেতে পারেন।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুন ভাল।
হিবিসকাস টি-তে পাতিলেবুর রস, গ্রিন টি-এ দারুচিনি, আমন্ডের সঙ্গে ক্যামোমাইল টি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে
বাদাম, ছোলা, স্নেহজাতীয় খাবার, বিনস, ফ্যাটি ফিশ খেতে পারেন।
জলখাবারে দইয়ের সঙ্গে ফ্ল্যাক সিড, আপেলের সঙ্গে আমন্ড বাটার খাওয়া যায়। আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরল কমায়। দইয়ের প্রোবায়োটিক ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়।
এক কিউব ডার্ক চকলেটের সঙ্গে একমুঠো বাদাম কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
কোনটার সঙ্গে কী খাবেন, তাতে যেমন কৌশল রয়েছে, তেমন কখন, কতটা খাবেন তা-ও জরুরি। ডায়টেশিয়ান হিনা নাফিস বলছেন, “খাবারের থালার অর্ধাংশের বেশিতে থাকুক ব্রকলি, পালং শাকের মতো স্টার্চহীন সবজি। বাকিটার অর্ধেকাংশে থাকুক চিকেন বা মাছ। বাকি জায়গায় ভাত, রুটি ইত্যাদি।” শুরুতে খান স্যালাড বা বাদাম দিয়ে, তার পরে চিকেন, মাছ, শেষে ভাত, রুটি ইত্যাদি। জলখাবার ভারী করুন, ফ্যাটি ফিশ, কার্বস দুপুরে, রাতে হালকা খান।
তবে পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বলছেন, “ব্যক্তি ও তাঁর শারীরিক সমস্যা বিশেষে এ নিয়ম কিন্তু আলাদা হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শরীরের কোন খাবার কতটা জরুরি এবং তা কী ভাবে খাবেন, জেনে নিতে হবে।”