Pediatric Dehydration

গরমে বমি, পেটখারাপের সমস্যায় ভুগছে শিশু? জলশূন্যতা হচ্ছে কি না বুঝবেন কী ভাবে বাবা-মায়েরা?

ছোটদের শরীরে জলের ঘাটতি হলে তার নানা লক্ষণ প্রকাশ পায়। যদি জল ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি হয়,তা হলে বদহজম, বমি, পেটের সংক্রমণ হবে। ঘন ঘন ডায়েরিয়া হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ১৪:৫৬
How to identify signs of dehydration in children

শিশুর জলশূন্যতার লক্ষণ চিনুন বাবা-মায়েরা। ছবি: ফ্রিপিক।

অত্যধিক ঘাম, বমি বা ডায়েরিয়ার মতো রোগ হলে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়। তখন নানা ভাবে শরীর জানান দেয় যে, জলশূন্যতা তৈরি হয়েছে। গরমের সময়ে এই সমস্যা আরও বাড়ে। বিশেষ করে ছোটদের শরীরে জলের ঘাটতি হলে তার নানা লক্ষণ প্রকাশ পায়। যদি জল ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি হয়,তা হলে বদহজম, বমি, পেটের সংক্রমণ হবে। ঘন ঘন ডায়েরিয়া হবে। সে ক্ষেত্রে বাবা-মাকে বুঝতে হবে, শিশুর শরীরে জলশূন্যতার সমস্যা দেখা দিয়েছে। লক্ষণ চিনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছেও যেতে হবে।

Advertisement

এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, গরমের সময়ে জলশূন্যতা ভোগায় অনেক শিশুকেই। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটরা ঠিকমতো জল খায় না। স্কুলের সময়টাতে জল খাচ্ছে কি না, তা দেখার কেউ থাকে না। ফলে শরীরে জলের ঘাটতির পাশাপাশি খনিজ উপাদানগুলি যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডের ঘাটতি হতে থাকে। এর থেকে বমি, পেটের গন্ডগোল হতে পারে, জ্বরও আসতে পারে।

কোন কোন লক্ষণ খেয়াল করবেন বাবা-মায়েরা?

১) শিশুর প্রস্রাব হলুদ হয়ে যাবে। যদি দু’-তিন ঘণ্টা অন্তর প্রস্রাব না করে, তা হলে বুঝতে হবে শরীরে জলের ঘটতি হচ্ছে।

২) মুখের ভিতর বারে বারে শুকিয়ে যেতে থাকবে। ঠোঁটের চারপাশের ত্বকও শুকিয়ে যাবে।

৩)শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হলে, এর জের পড়বে চোখেও। খেয়াল করবেন, শিশুর চোখ জ্বালা করছে কি না, চোখ দিয়ে জল পড়বে, চোখ ফুলে যাবে।

৪)শিশু দুর্বল হয়ে পড়বে। সব সময়েই ঝিমোবে, কাজ করতে চাইবে না।

৫) ঘন ঘন জ্বর আসবে শিশুর, সেই সঙ্গে বমি, পেটখারাপের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আচমকা অজ্ঞান হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয় অনেক সময়ে।

কী করণীয়?

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, স্কুলে টিফিনের সময়ে রোদে ঘেমেনেমে যায় ছোটরা। তার পরে জলও সে ভাবে খায় না। এর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। বাবা-মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে, স্কুলের সময়টাতে শিশুরা জল ঠিকমতো খাচ্ছে কি না। প্রয়োজনে শিক্ষক বা শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলাও প্রয়োজন।

টিফিনে ফলের রস করে দিতে পারেন শিশুকে। গরমের সময়ে লেবুর রস, তরমুজের শরবত বা আনারসের শরবত করে দিলে ভাল হয়। জলের পরিমাণ বেশি এমন ফল খাওয়াতে পারেন।

শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম বেরিয়ে যায়। সেই ঘাটতি পূরণ করতে হলে ওআরএস বা নুন-চিনির জল বেশি খেতে হবে। শিশু স্কুল থেকে ফেরার পর বা বাইরে খেলাধুলা করে এলে, নুন-চিনির জল নিয়ম করে খাওয়াবেন।

গরমের সময়ে বাইরের খাবার, ভাজাভুজি কম খাওয়াই ভাল। বাড়িতে কম তেলে রান্না খাবারই খাওয়ান শিশুকে।

স্পোর্টস ড্রিঙ্ক জলশূন্যতার সমস্যা দূর করতে পারে। এক গ্লাস জলে গোটা পাতিলেবুর রস, এক চিমটে সৈন্ধব লবণ, এক চামচ মধু মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এতে শিশুর শরীর চনমনে থাকবে। ক্লান্তি ভাব কমবে।

একটি বোতলে জল নিয়ে তাতে ছোট ছোট টুকরো করে কাটা শসা ভিজিয়ে দিন। ঘণ্টা দুয়েক রাখার পরে, সেই জল অল্প অল্প করে শিশুকে খাওয়ান। শসার জলে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা খনিজের ঘাটতি মেটাবে। এই ডিটক্স পানীয় গরমের দিনে খুবই উপকারী।

Advertisement
আরও পড়ুন