ধুঁধুল থেকেই মিলবে ছোবড়া। বাড়িতে কী ভাবে গাছ বড় করবেন? ছবি: আনন্দবাজার ডট কম
গা- হাত-পা পরিষ্কারের জন্য পুরনো ছোবড়ার বদলে ঝকঝকে স্নানঘরে জায়গা করে নিয়েছে কৃত্রিম তন্তুতে তৈরি নরম লুফা। তবে ত্বক নিয়ে চর্চাকারীরা সব সময়েই বলেন, ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক জিনিসই ভাল।
এক সময় বহু বাড়িতে অনাদরে উঠোনের এক কোণে বেড়ে উঠত ধুঁধুল গাছ। লম্বাটে দেখতে এই সব্জিটি পেকে গেলে তা থেকেই জালি পাওয়া যেত। ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য স্নানের সময় তা দিয়ে শুধু গা ঘষতেন অনেকে। এক সময় যে গাছ বীজ পড়ে যত্নআত্তি ছাড়াই বেড়ে উঠত, এখন ফ্ল্যাটবাড়ির কালে তার স্থান নেই। নতুন প্রজন্মের অনেকে এই গাছের নামও জানেন না। তবে যদি বাগানের শখ থাকে, বারান্দাতেই টবে লাগিয়ে নিতে পারেন গাছটি। লতানে প্রকৃতির গাছটি একটু জায়গা, সঠিক অবলম্বন পেলেই বেড়ে উঠবে।
১। অনলাইনে বা নার্সারিতে ধুঁধুলের বীজ পাওয়া যায়। বীজ থেকে চারা পেতে গেলে অঙ্কুরোদগমের প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রথমেই বীজ ১২ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন। জল থেকে তুলে পরিষ্কার অথচ ভিজে সুতির কাপড়ে তা মুড়ে কোনও একটি পাত্রে রেখে দিন। দিন দুই পরে কাপড় খুললেই দেখা যাবে, সাদা অঙ্কুর বেরিয়েছে।
২। ধুঁধুলের জন্য মাটি প্রস্তুতির দরকার। মাটি ঝুরঝরে করে নিয়ে কিছু পরিমাণ গোবর সার মিশিয়ে নিন। টবের জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল হওয়া দরকার। মাটি আলগা করে অঙ্কুরিত বীজ তাতে ছড়িয়ে অল্প করে জল ছিটে দিন। তবে এই পর্যায়ে টব চড়া রোদে রাখা যাবে না। আলো-হাওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণে আসে, এমন জায়গায় সেটি রাখুন। কয়েক দিনেই চারা বেরোবে।
৩। চারা বড় হলে বাঁশের খুঁটি বা কঞ্চি পুঁতে দিতে হবে, যাতে সেটি আঁকড়ে গাছ বড় হয়। গাছে যেমন জল দিতে হবে, তেমনই খেয়াল রাখতে হবে যেন গোড়ায় জল না জমে। গাছ বড় হতে শুরু করলে সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। সেটি যাতে ঠিকমতো আলো-হাওয়া পায়, দেখতে হবে।
৪. রোগ বা পোকার আক্রমণ না হলে ৪০ দিনের মধ্যে ফুল আসবে। ৫০-৬০ দিনে ফলও হবে। ধুঁধুল অনেকে সব্জি হিসাবে খান। তবে সেটি কচি অবস্থায়। পেকে গেলে এর খোসা সহজেই ছাড়িয়ে নিলে ভিতরে পাওয়া যায় বর্তুলাকার। তার ভিতরে থাকে কালো বীজ।
কী ভাবে কাজে লাগাবেন ছোবড়া?
· ধুঁধুল শুকিয়ে গেলে খোসা ছাড়িয়ে ছোবড়া ছুরি দিয়ে পাতলা করে কেটে নেন। সেটি রাতভর ঈষদুষ্ণ জলে রাখলেই তা নরম হয়ে যাবে। গা ঘষার জন্য জন্য কৃত্রিম লুফার বদলে ধুঁধুলের ছোবড়া ব্যবহার করতে পারেন। পা ঘষার জন্য শক্ত ছোবড়ার দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে সেটি রাতভর জলে না ভিজিয়ে ঘণ্টা ২-৩ রাখলেই কাজ হবে।
· হেঁশেলে বাসন মাজার কাজেও ধুঁধুলের ছোবড়া ব্যবহার করা যায়। অ্যালুমিনিয়াম বা লোহার কড়াই মাজতে শক্ত জিনিস লাগে। ধুঁধুলের ছোবড়া এমনিতে শক্তই হয়। সেটি নরম করতে হলে জলে ভিজিয়ে রাখার দরকার পড়ে।
· শুধু বাসন নয়, রান্নাঘরে তেলচিটে হয়ে যাওয়া গ্রানাইট, মার্বেলও এটি দিয়ে পরিষ্কার করা যায়।