ঘরে রাখার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে কিছু গাছ। ছবি: সংগৃহীত।
ঘরের ভেতর সতেজ গাছপালা দেখলে মনটাই ভাল হয়ে যায়। কিন্তু, সব গাছ ঘরের ভেতর রাখা স্বাস্থ্যকর নয়। অন্দরসজ্জার জন্য গাছ লাগাতে চাইলে এড়িয়ে চলুন কিছু গাছ।
১.পিস লিলি: এই জনপ্রিয় ইনডোর গাছটি তার সাদা ফুলের জন্য পরিচিত। তবে, এই গাছটির পাতা এবং ফুল, উভয়েই বিষাক্ত। ত্বকে লাগলে জ্বালাভাব এবং মুখের ভেতরে গেলে এ থেকে জ্বালাপোড়া ভাব হয়। বাড়িতে ছোট শিশু এবং পোষা প্রাণী থাকলে এই গাছ ঘরে না রাখাই ভাল।
২. ডাম্ব কেন: এই আকর্ষণীয় গাছটিতে বড়, রঙিন পাতা থাকে। এর পাতা এবং ডাল উভয়েই ক্যালসিয়াম অক্সালেট ক্রিস্টাল ধারণ করে, যা মুখের ভেতরে তীব্র জ্বালাপোড়া এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। গিলে ফেললে এ থেকে শ্বাসকষ্ট হয় এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যু অবধি ঘটতে পারে।
৩. স্নেক প্ল্যন্ট: এই গাছের রস চোখ ও ত্বকে জ্বালার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। এই গাছের পাতা গিলে ফেললে এর থেকে বমি ও ডায়েরিয়া হতে পারে।
মুম্বই-নিবাসী উদ্ভিদ-বিশেষজ্ঞ আরতি খন্নার মতে, “গাছ ঘরে রাখার অনেক ভাল দিক নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু, কিছু দিক মনে রাখা প্রয়োজন। অনেক সময় আমাদের বাড়িতে পোষ্য থাকে, গাছ থাকলে ওরা মুখ দেয়। অনেক সময় সারা দিনের চলাফেরাতে আমাদের গায়ে ঘষা লাগতে পারে গাছের পাতা বা ডাল। যদি ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক গাছ থাকে ঘরে, তবে আমাদেরও ক্ষতি হতে পারে। তাই, ঘরে গাছ লাগানোর সময়ে একটু সচেতন থাকা উচিত।”
সবুজ গাছের সমারোহ যে শুধু ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তা-ই নয়, ঘরের ভিতর গাছ লাগানোরব আরও নানা উপকারিতা রয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘরে গাছপালা থাকার অনেক উপকারিতা আছে— সবুজের আশ্রয় যেমন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, তেমনই মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
শুদ্ধ বাতাস: গাছপালা আশপাশের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে কিছুটা সাহায্য করে। বাতাস থেকে ফরম্যালডিহাইড, বেঞ্জিন, ট্রাইক্লোরোইথিলিন জাতীয় বিষাক্ত পদার্থ দূর করে আপনাকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ দিতে সাহায্য করে।
সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি: ঘরের ভিতরে সবুজের ছোঁয়া বাড়ির অন্দরসজ্জাই বদলে দেয়। মনস্তত্ত্ব বলে, গাছের সতেজ সবুজ রং আমাদের মনে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।
অন্দর-বাগানের যত্ন নেবেন কী ভাবে?
অন্দরবাগানের যত্ন না নিলেও কিন্তু তা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।
১) গাছগুলিকে নিয়মিত জল দিন, তবে অতিরিক্ত জল দেবেন না। সূর্যালোক পর্যাপ্ত না পাওয়ায় এদের গোড়ায় অতিরক্ত জল সহজে শুকোতে পারে না। তাই, বেশির ভাগ গাছের মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই জল দেওয়া উচিত।
২) গাছগুলিকে নিয়মিত সার দিতে ভুলবেন না। কোন গাছের জন্য কোন সার উপযুক্ত, সে বিষয়ে স্থানীয় নার্সারির সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে পারেন। এটি এদের সুস্থ এবং শক্তিশালী ভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
৩) আপনার ঘরের গাছগুলিকে নিয়মিত পরীক্ষা করুন, যাতে পোকামাকড় গাছ নষ্ট না করে বা গাছে কোন রোগব্যাধি বাসা না বাঁধে। মৃত পাতা এবং ফুল নিয়মিত সরিয়ে নিন। এটি আপনার গাছগুলিকে সুন্দর রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। যদি কোন সমস্যা চোখে পড়ে, কোনও স্থানীয় নার্সারিতে এক বার দেখিয়ে নিতে পারেন।