অবাঞ্ছিত জিনিসপত্র দিয়েই বাগানের টব বানিয়ে নিতে পারেন। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঘর লাগোয়া ছোট্ট বারান্দা হোক বা ছাদের এক চিলতে কোণ, বাগান করার শখ থাকলে, সামান্য জায়গাই যথেষ্ট। রকমারি ফুলের গাছ, ফল, সব্জি সবই ফলানো যায় ছোট, বড় রকমারি টবে। তবে ঝোলানো টব হোক বা মাটির টব, কিনতে খরচ রয়েছে। যদি কৌশলে সেই খরচ বাঁচানো যায়!
যে কোনও বাড়িতেই এমন অনেক কিছু থাকে, যার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। সেই সব জিনিস ব্যবহার করেই কিন্তু বারান্দা, ছাদ এমনকি এক ফালি বাগানে টবের অভাব পূরণ হবে। বর্জ্য ব্যবহার হবে সুবজায়নেই।
এমন কোন কোন জিনিস দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন টব?
প্লাস্টিকের বোতল
যে কোনও বাড়িতেই ইদানীং গেলে পাওয়া যায় গাদা গাদা প্লাস্টিকের বোতল। রাস্তায় বেরিয়ে জল কেনা হোক বা ফলের রসের বোতল, নরম পানীয়। কিনতে গেলেই পাওয়া যায় প্লাস্টিকের বোতল। প্লাস্টিক প্রকৃতির সঙ্গে মেশে না। প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকরও। প্রতিদিনের ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক আবর্জনার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এই প্লাস্টিকের বোতল কেটে তার মধ্যে মাটি ভরে নানা ধরনের ফুল ফোটানো যায়। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি কোনও কোনও গ্রামে প্লাস্টিকের বোতলকে টব হিসাবে ব্যবহার করে ফুল ফোটানোর বাস্তব ছবিও দেখা যায়। চাইলে প্লাস্টিকের বোতলকে আড়াআড়ি ভাবে রেখে উপরিভাগের মাঝের অংশ কেটে মাটি ভরে ইচ্ছেমতো গাছ বসাতে পারেন বা বীজ ছড়াতে পারেন। তবে প্লাস্টিকের বোতলের নীচের অংশ ছোট ছিদ্র রাখতে হবে, যাতে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যেতে পারে।
কফি কাপ
শখ করে কেনা কফি কাপে কখনও ধাক্কা খেয়ে চিড় ধরে যায়, কখনও আবার হাতল ভেঙে যায়। সেই কফি কাপের জায়গা হয় আবর্জনার স্তূপে। তবে সেই কাপেই কিন্তু রকমারি গাছপালা লাগাতে পারেন। এননকি কফি কাপে ছোট ছোট গাছ বসিয়ে ঘরের আনাচ-কানাচে সাজিয়ে রাখতে পারেন। তবে কফি কাপের নীচের অংশে ছিদ্র যেহেতু করা মুশকিল, তাই মাটি দেওয়ার আগে নীচের অংশে কিছু নুড়ি-পাথর রেখে দিন। এতে গাছের গোড়ায় চট করে জল জমবে না। সিংগোনিয়াম, জেড প্ল্যান্ট, স্পাইডার প্ল্যান্ট-সহ বিভিন্ন গাছ কফি কাপে বসাতে পারেন।
পুরনো ঝুড়ি বা বাক্স
ঘর সাজানোর জন্য ঝুড়ি বা রকমারি বাক্স পুরনো হয়ে গেলে, সেগুলি ফেলেই দেওয়া হয়। তবে তাতেও কিন্তু মাটি ভরে ফুলগাছ থেকে অন্যান্য ঘর সাজানোর গাছ বসানো যায়। সাধারণত, ঝুড়িজাতীয় জিনিসের গায়ে ও নীচের অংশে অনেক ফাঁক থাকে। এই সমস্ত জায়গা দিয়ে মাটি ও জল বেরিয়ে জায়গা নোংরা হতে পারে। তাই প্রথমেই এই ধরনের জিনিসটিতে একটি ‘বাটার পেপার’ দিয়ে দিন। তারপর পাথর ও মাটি যোগ করতে হবে। তা হলেই তৈরি অন্য রকম টব।
পুরনো কেটলি
চায়ের জন্য চিনামাটির সুদৃশ্য কেটলি বহু বাড়িতেই থাকে। কিন্তু পুরনো হয়ে গেলে কখনও তাতে চিড় ধরে যায়। কখনও আবার মনে হয় পুরনো জিনিস ফেলে নতুন জিনিস কেনা দরকার। কিন্তু কোনও এক সময়ের শখের কেটলি দিয়েও দারুণ টব বানিয়ে নেওয়া যায়। এমন টবে গাছ বসিয়ে টেবিলে সাজিয়ে রাখলেও কিন্তু দেখতে বেশ লাগবে।
কাচের বোতল
বহু বাড়িতেই কঠিন পানীয় খাওয়ার চল আছে। সেক্ষেত্রে বাড়িতে রকমারি কাচের বোতল জমে যায়। কিছু কিছু বোতল দেখতে এতটাই সুন্দর হয় যে ফেলে দিতে খারাপ লাগে। দু’ভাবে এই বোতল কাজে লাগাতে পারেন। এক, আঁকাআকির শখ থাকলে বোতলের গায়ে নিজেই ‘গ্লাস পেন্টিং’ করে নিতে পারে। নয়তো সুদৃশ্য বোতল থাকলে তাতে জল দিয়ে গাছ রাখতে পারেন। মানি প্ল্যান্ট, পিস লিলি, পোথোস, স্পাইডার প্ল্যান্ট এমন অনেক গাছই আছে যেগুলি জলে দিব্যি বেড়ে ওঠে।