এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
যা ইচ্ছে তাই খাওয়ার দিন আর নেই৷ যে খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে ও কোভিড ১৯-এর কোমর্বিডিটি বাড়ার আশঙ্কা থাকবে, তা বর্জন করতে হবে সযত্নে৷ কারণ, ভিতর থেকে শক্তপোক্ত থাকতে না পারলে, ভয় থেকেই যাবে। ফলে কী কী খাওয়া যাবে আর কোনটা বাদ দিতে হবে, তা বুঝে নেওয়া দরকার৷
চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, একেবারে বাদ দিতে হবে নরম পানীয় ও প্যাকেট-বন্দি ফলের রস। মিষ্টি, কেক-পেস্ট্রির, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-চিকেন উইংস ও রাখা যাবে না আর পছন্দের তালিকায়। ছাঁকা তেলে বা ঘিয়ে ভাজা খাবারও আপাতত বাদ দিন। ফাস্ট ফুডকে চিরতরে বিদায় জানান৷
মন খারাপ করে লাভ নেই। বরং মন ভাল করতে মাঝেমধ্যে চলতে পারে চা-চকলেট। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত এ সব খেলে যা শারীরিক ক্ষতি হয়, তার হাত ধরে প্রশস্থ হয় জীবাণু সংক্রমণের রাস্তা৷ বাড়ে রোগের জটিলতাও৷ ফলে খাবার খাওয়ার আগে লাভ-ক্ষতি জেনে নেওয়াই ভাল।
কোন খাবারে কী ক্ষতি
· নরম পানীয়তে থাকে পুষ্টিহীন কিছু ক্যালোরি৷ ফলে নিয়মিত এমন জিনিস খেলে ওজন বাড়ে। বাড়ে ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিনড্রোম নামে সমস্যার আশঙ্কা৷ যার জেরে ক্ষতি হয় রোগ শরীরের প্রতিরোধ শক্তিরও৷
· প্যাকেট-বন্দি ফলের রসে থাকে প্রচুর চিনি৷ গোটা ফল চিবিয়ে বা স্মুদি বানিয়ে খেলে শরীরে চিনি ঢোকে ধীরে। কিন্তু ফলের রস খেলে একসঙ্গে অনেকটা চিনি আসে। তাই নিয়মিত ফলের রস খেলে ওজন বাড়ে। সঙ্গে ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিনড্রোমের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়৷ ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। করোনা সংক্রমণ হলে জটিলতা বাড়ে।
· দিনে দু’-এক বারের বেশি কফি চলবে না৷ চিনি বা সুগার-ফ্রি মিশিয়ে তো নয়ই৷ ক্যাফেনসমৃদ্ধ অন্য খাদ্য বা পানীয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য৷ অতিরিক্ত ক্যাফেন শরীরে কর্টিজোল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়৷ কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ অনেকের ঘুম কমে যায়৷ তাতেও প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে৷
· চা ও চকলেট এমনিতে শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর নয় বলেই শোনা যায়। কিন্তু কতটা খেলে তা সীমার মধ্যে থাকছে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই দু’টি জিনিসেই কিছুটা পরিমাণ ক্যাফেন থাকে। ফলে বেশি চা বা চকলেট খেলে ক্যাফেনের কারণে শেষ পর্যন্ত ক্ষতিই হয়৷
· চিনি ও কৃত্রিম চিনির কোনও গুণ নেই৷ ময়দা-ঘি-মাখনের সঙ্গে যুক্ত হলে তা আরও ক্ষতি করে৷ ওজন বাড়ে৷ বাড়ে ডায়াবেটিস বা মেটাবলিক সিনড্রোমের আশঙ্কা৷ প্রদাহের প্রবণতা বেড়ে যায়৷ কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ কাজেই চিনি-ময়দা-ঘি-মাখনে বানানো খাবার না খাওয়াই ভাল৷
· ভাজাভুজি খাওয়াও কমাতে হবে। কারণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর নুন থাকে৷ নুনের ধর্ম হল শরীরে জল ধরে রাখা। উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা থাকলে, তা বাড়ে। কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ সব খাবারে ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটও প্রচুর পরিমাণে থাকে। উপকারি জীবাণুর ভারসাম্য নষ্ট করে এরা৷ পাশাপাশি, বাড়তে পারে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের আশঙ্কা৷ কোভিডের জটিলতার মূলে এদের বড় হাত আছে বলে জানালেন চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়৷
এ ক’টি কথা মেনে চললে কোভিডের কোমর্বিডিটির আশঙ্কা নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সম্ভব।