হৃদ্রোগের আশঙ্কা আছে কি না, বোঝা যেতে পারে এই লক্ষণ দেখলে। ছবি: ফ্রিপিক।
সকাল থেকে রাত অবধি হাই উঠতেই থাকে? অফিসে, বাড়িতে অথবা বাসে-ট্রামে যাওয়ার সময়েও ঘন ঘন হাই ওঠে? ক্লান্তির লক্ষণ ভেবে এড়িয়ে যান অনেকেই। তবে ঘন ঘন হাই তোলাও কিন্তু হৃদ্রোগের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকলে, ভাল ভাবে ঘুম না হলে ঘন ঘন হাই ওঠে। তা ক্লান্তির জন্যই হয়। কিন্তু যদি দেখেন, ঠিকমতো বিশ্রাম নেওয়ার পরেও হাই উঠেই যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে শরীরের কোনও গুরুতর সমস্যা রয়েছে। হৃদ্রোগ মানেই অনেকে ভেবে নেন, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গই দেখা দেবে। কিন্তু ছোটখাটো এমন আরও লক্ষণ আছে, যেগুলি এড়িয়ে যান অনেকেই। পরে সেটিই বিপদের কারণ হয়ে ওঠে।
হাই কেন ওঠে তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে গবেষকেরা বলছেন, স্নায়ু সংক্রান্ত জটিলতা বাড়লে অতিরিক্ত হাই উঠতে পারে। হৃৎপিণ্ডের আশপাশে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও হাই ওঠে। আবার যদি হৃদ্পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণে সমস্যা হয়, হৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়, তখনও ঘন ঘন হাই উঠতে পারে। এমনকি এ-ও দেখা গিয়েছে, স্ট্রোকের আগে এবং পরে অস্বাভাবিক ভাবে হাই ওঠে অনেকের।
তাই বিনা কারণে শরীর ক্লান্ত না থাকলেও যদি হাই তোলার সমস্যা বাড়তে থাকে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে রক্তচাপ বেশি থাকলে, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে, দেরি করা ঠিক হবে না। বংশগত ভাবে যাঁদের পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, কম বয়স থেকেই, মোটামুটি ২০-২৫ বছর থেকেই রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ দেখতে হবে। লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করে খুব সহজেই দেখা যেতে পারে কোলেস্টেরল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কি না। পরিবারে কোলেস্টেরলের ইতিহাস না থাকলেও, ৩০-৩৫ বছর বয়স থেকে লিপিড প্রোফাইল স্ক্রিনিং করাতে হবে।বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিরাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। হার্টের ধমনী অর্থাৎ করোনারি আর্টারি ব্লক হয়ে গিয়ে আচমকা হার্ট অ্যাটাকে বিপদও ঘটছে অনেক। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।