প্রতীকী ছবি।
বহু বাড়িতেই আগে দেখা যেত, রাতের খাওয়া হয়ে গেলে বাবা-কাকারা একটু পাড়ায় আড্ডা দিতে বেরোলেন। এতে আড্ডা তো হতই, তার উপর খাবার হজমও তাড়াতাড়ি হয়ে যেত বলে মনে করতেন তাঁরা। কিন্তু কারও যদি বদহজমের দীর্ঘ সমস্যা থাকে বা অন্য যে কোনও রকম পেটের গোলমাল লেগেই থাকে, তা হলে কি সত্যিই খাওয়ার পর কয়েক মিনিট হাঁটাহাটি করলে উপকার হতে পারে?
কী ভাবে
পেটে খাবার যাওয়ার পর থেকেই শরীর কাজ করা শুরু করে দেয়। খাবারের বেশ কিছুটা অংশ পেট থেকে ক্ষুদ্রান্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বেশ কিছু গবেষণা বলছে, খাওয়ার পর হাঁটলে পেট থেকে ক্ষুদ্রান্ত্র অবধি খাবার তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে। যত তাড়াতাড়ি এটা হবে, তত গ্যাস, পেটে ব্যথা, অম্বলের মতো সমস্যা কম দেখা যাবে। গবেষণা এ-ও বলছে, খাওয়ার পর ৩০ মিনিট হাঁটলে এবং নিয়মিত হাল্কা ব্যায়াম করলে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
কাদের জন্য বেশি উপকারী
শুধু হজমের ক্ষেত্রেই নয়, যাঁদের ডায়াবিটিসের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের পক্ষেও খাবারের পর হাঁটাটা অত্যন্ত উপকারী। নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক এই বিষয়ে জানিয়েছেন, যাঁদের টাইপ টু ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের খাওয়ার পর মিনিট ৩০ হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যদি খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে। পেটে খাবার গেলে, শরীর তা থেকে গ্লুকোজ তৈরি করে। যা মূলত আমাদের শরীরে এনার্জির জোগান দেয়। কিন্তু খাওয়ার পর রক্তে সেই গ্লুকোজের মাত্রা বেশি হয়ে যায় কিছু ক্ষণের জন্য। তাই শরীর ইনসুলিন তৈরি হয় যাতে এই গ্লুকোজ শরীরের বিভিন্ন কোষে ঠিক মতো পৌঁছে যেতে পারে। কিন্তু ডায়াবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে এই ইনসুলিনের কার্যকারিতা প্রয়োজন অনুযায়ী থাকে না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। সুস্থ থাকতে চাইলে, যদি এই সময়ে হেঁটে নেওয়া যায়, তা হলে এই বাড়তি গ্লুকোজ ব্যবহার করে ফেলতে পারে শরীর।
তাই রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কতক্ষণ পর
তবে মনে রাখতে হবে যে খাওয়ার একদম পরই যদি হাঁটতে শরু করেন তা হলে অম্বলের সমস্যা হতে পারে। তাই দুপুর বা রাতের খাবার খাওয়ার পর অন্তত ৩০-৪০ মিনিট বিরতি দিতে পারলে সবচেয়ে উপকৃত হবেন।