প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
করোনা সংক্রমণের হার কমছে। দেশে নানা জায়গা লকডাউন পরিস্থিতি শিথিল হয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যেও আগামী মাস থেকে একই জিনিস হয় কি না, তা দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন মানুষ। বাবা মায়েরা ঘনবন্দি বাচ্চাদের সামলাতে সামলাতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। বাচ্চারাও অস্থির। কিন্তু পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই কি তাদের বিকেলে খেলতে পাঠাবেন? বাড়িতে তাদের খুদে বন্ধুবান্ধবদের কি ডাকবেন? কী ভাবে সুরক্ষিত রাখা যায় সন্তানকে? জেনে নিন।
১। বাবা-মায়েদের অনেকের হয়তো টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। পুরোটা না হলেও অন্তত প্রথম টিকা পড়েছে অনেকেরই। কিন্তু বাচ্চারা এখনও সে সুযোগ পায়নি। তাদের জন্য মোট ৪ রকম টিকার গবেষণা চলছে দেশে। টিকা পেতে এখনও দেরি। তাই আপনি নিশ্চিন্তে শপিং মল, রেস্তরাঁয় যেতে পারলেও, কিন্তু বাচ্চারা ততটা সুরক্ষিত নয়। তাই সপ্তাহান্ত কী ভাবে কাটাবেন, তার পরিকল্পনা করার আগে, এই বিষয়টা মাথায় রাখুন।
২। করোনা সংক্রমণের হার কমা মানেই ভাইরাস উধাও, তা নয়। ডেল্টা প্রজাতির আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। দেশে ডেল্টা প্লাস ছড়িয়েছে ২২ জনের মধ্যেই। তৃতীয় ঢেউ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে নানা জায়গায়। বিশেষজ্ঞেরা বারবার শতর্ক করে দিচ্ছেন, এই তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে সময়ের আগেই। তাই লাগামছাড়া ঘোরাফেরা করবেন না। প্রয়োজন না পড়লে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে ঘনঘন বেরোবেন না। নিজেরাও কোনও রকম জনসমাগমে খুব বেশি যাবেন না। কারণ টিকাকরণের পর আপনার কিছু না হলেও, আপনি সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারেন আপনার সন্তানের মধ্যে।
৩। সমবয়সি বাচ্চাদের সঙ্গে মেলামেশা না করলে বাচ্চাদের স্বাভাবিক স্বভাব-আচরণে বদল আসতে পারে। এমনিতেই তাদের স্কুলের ক্লাস এখন ফোন কিংবা কম্পিউটারের পর্দায় আটকে। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়নি বহুদিন। তাই পাশের বাড়ির বাচ্চাটা যদি আপনার বাচ্চার সঙ্গে খেলার বায়না জোরে, তাহলে কী করণীয়? মনে রাখবেন, ঘরের মধ্যে বদ্ধ জায়গায় খেলার চেয়ে আবাসনের চত্বরের মধ্যে কিংবা বাড়ির ছাদে খেলাধুলো করা তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ। খেলতে যাওয়ার আগে বাচ্চাকে ভাল করে মাস্ক পরা, মাস্কে হাত না দেওয়া এবং চোখে-মুখে হাত না দেওয়ার পাঠ পড়ান। বাচ্চারা একসঙ্গে হলে হইচই করবেই। সেটা আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। কিন্তু সাইক্লিং বা এমন কোনও খেলায় তাদের উৎসাহ দিন, যাতে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে সরাসরি গায়ে হাত দিতে না হয়। খেলার সময় এবং খেলার সঙ্গী বেঁধে দিন। একবারেই অনেকক্ষণ ধরে অনেক বাচ্চাদের সঙ্গে যেন আপনার সন্তান না খেলে, সে দিকে খেয়াল রাখুন।
৪। আপনাদের হয়তো প্রথম টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। দু’জনেই বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করছেন। সপ্তাহে খুব বেশি বার বাড়ির বাইরে যান না। কিন্তু যে বাচ্চার সঙ্গে আপনার ছেলে বা মেয়ে খেলতে যাচ্ছে, তার বাড়ির লোকেরাও কি সমান সাবধানী? তাঁরাও কি কোথাও যান না কিংবা তাদের বাড়িতে ঘনঘন অতিথি আসেন না? আমাদের মতো দেশে, যেখানে বিপুল জনসংখ্যা, সেখানে বায়ো-বুদবুদ তৈরি করা খুব মুশকিল। সকলের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করাও অসম্ভব। তাই আপনাকেই সাবধান হতে হবে। বাচ্চারা অস্থির হয়ে পড়লে আপনি একটু সময় বার করে তাদের পার্কে নিয়ে যেতে পারেন। কিংবা বাড়ির ছাদেও বিকেলে একটু খেলতে পারেন। সারাক্ষণ টিভি বা ভি়ডিয়ো গেম দিয়ে বসিয়ে রাখবেন না। বাবা-ছেলে মিলে সকালে সাইকেল চালান, কিংবা মা-মেয়ে সময় বার করে ব্যাডমিন্টন খেলুন। গোটা পরিবার একসঙ্গে কোনও খেলা খেলতে পারেন। বাচ্চার যাতে শারীরিক পরিশ্রম হয়, সেটা দেখা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এখনই অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে না পাঠিয়ে, নিজেরাই সেই দায়িত্ব নিন।