প্রতীকী ছবি।
আধুনিক কায়দার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাজারে গিয়ে দেখলেন, তার তাকে সাজানো রয়েছে ছোটবেলার পছন্দের সেই চিপস্ বা টফি। কোনও সাহেবি ব্র্যান্ড নয়। সেই সাধারণ প্যাকেট। যার নাম চেনা যায় না। শুধু স্বাদ মনে থাকে। তা দেখেই মনটা আনন্দে ভরে উঠল। বাহারি সব জিনিসপত্রের ভিড়ে আজকাল সেই সাধারণ টফি, চিপস্ দেখাই যায় না। হঠাৎ নাগালে পেয়ে তাই বেশ কয়েকটি প্যাকেট কিনেও ফেললেন। যে সকল ছোটবেলার বন্ধুরা এক শহরে থাকেন, তাঁদের খাওয়ালেন। তা ঘিরে আলোচনা, আড্ডাও চলল।
এক কালে পাড়ার দোকানে বিদেশি জিনিস দেখলে খুশি হতেন বেশি সংখ্যক মানুষ। এখন উল্টোটাই ঘটছে। এমন জিনিস, যা নিজের ছোটবেলার কথা মনে করায়, তার দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছে ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি অব ইকনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানেই এমন তথ্য ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, ঘরে বানানো জিনিসের কদর বাড়ছে। বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের তৈরি খাবার থেকে হাতের কাজ, সবই বেশি টানছে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে। কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু অতিমারির এই সময়ে ঘরোয়া জিনিয়ের প্রতি টান যেন আরও বেড়েছে সকলের।
খাওয়ার জিনিসের প্রতি এই টান সবচেয়ে বেশি দেখা গেলেও, অন্যান্য সামগ্রীও রয়েছে এই তালিকায়। এলাকার কারও হাতে বানানো সাবান, ক্রিম, ঘর সাজানোর জিনিস কেনার ঝোঁক বেড়েছে। কারও আবার আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পোশাক ছেড়ে স্থানীয় ডিজানারের বানানো জিনিসেই মন মজেছে। এখন সময়টা এমনই।
এক কালে বিদেশের যে কোনও বড় শহরে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের দোকানেই থাকত ভি়ড়। এখন যাঁদের ক্রয় ক্ষমতা বেশি, তাঁদের দেখা যায় ছোট ছোট শহরের বুটিকে গিয়ে কেনাকাটা করতে। হাতে বানানো সুগন্ধী থেকে জ্যাম-জেলি— সবের কদর বেড়েছে। এ শহরের বাসিন্দারাও সপ্তাহান্তে বিভিন্ন জেলার মিষ্টি কিনতে বেরোন। বোলপুর গিয়ে সেখানকার মহিলাদের হাতে বানানো রকমারি কিনে এনে শহুরে গেরস্থালি সাজান অনেকেই।
এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে বিভিন্ন মহাদেশের নাগরিকদের মধ্যে। সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে, রুচির এই বদলের প্রভাব পড়ছে বিপণনের ধারায়। ছোট-বড় সব বিপণি ক্রেতাদের রুচি অনুযায়ী জিনিসপত্রের জোগান দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে।