লং-লাস্টিং ফোন ব্যাটারি। ছবি: সংগৃহীত।
কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে অনলাইনে খাবার অর্ডার করতে গিয়ে দেখলেন ফোন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। সারা দিন নানা কাজের মধ্যে ফোনে চার্জ দিতে ভুলে গিয়েছেন। কখন যে ফোনের ব্যাটারি লো সিগন্যাল দিয়েছে, বুঝতেও পারেননি। এখন বাড়ি গিয়ে ফোনে চার্জ দেবেন, তবে খাবার অর্ডার করা যাবে। তারও ঘণ্টাখানেক পর খাবার আসবে। প্রয়োজনের সময়ে ফোনে চার্জ না থাকলে এমন বিড়ম্বনায় প্রায় সকলকেই পড়তে হয়। যত দামি ফোনই কিনুন না কেন, ব্যাটারিতে চার্জ না থাকার সমস্যা কম-বেশি প্রায় সব সংস্থার ফোনেই আছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই আবার সঙ্গে ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’ রাখেন। সেটিকেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর চার্জ দিতে হয়। তবে, মনে করে ফোনে চার্জ দেওয়ার এই পর্ব এ বার একেবারে শেষ হতে চলেছে। বেজিং-এর একটি সংস্থা এমনই নিউক্লিয়ার ব্যাটারি আনতে চলেছে বাজারে। যা এক বার চার্জ দিলেই ফোন চলবে টানা ৫০ বছর।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নিউক্লিয়ার বা পরমাণুর নাম শুনে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আকার, আকৃতিতে আর পাঁচটা সাধারণ ফোনের ব্যাটারির মতোই দেখতে হবে এই নিউক্লিয়ার ব্যাটারি। বেটাভোল্ট নামের ওই সংস্থা আইসোটোপ-৬৩কে একত্রিত করে এমন একটি মাইক্রোচিপ তৈরি করেছে, যা দেখতে অনেকটা ১ টাকার কয়েনের মতো। ওই সংস্থার দাবি, এটিই বিশ্বের প্রথম ব্যাটারি, যার মধ্যে পারমাণবিক শক্তি এমন ক্ষুদ্রতম রূপে প্রোথিত রয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মের এই ব্যাটারি পরীক্ষামূলক ভাবে সফল হয়েছে। ফোনে এই ব্যাটারির প্রয়োগ সফল হলে পরবর্তী কালে ড্রোনের জন্যেও তা উৎপাদন করা হবে। একটি প্রেস বিবৃতিতে ওই সংস্থা জানিয়েছে, মহাকাশ চর্চার সরঞ্জাম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিকিৎসা বিজ্ঞান, মাইক্রোপ্রসেসর, উন্নত সেন্সর, ড্রোন এবং ছোট রোবটেও এই ব্যাটারি কাজ করবে।
আকার, আয়তনে কেমন হবে নিউক্লিয়ার ব্যাটারি?
দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে এই ব্যাটারির আকার হবে ১৫ মিলিমিটার। ৫ মিলিমিটার পুরু এই ব্যাটারিটি বর্তমানে ৩ ভোল্টের বিনিময়ে ১০০ মাইক্রোওয়াট শক্তি উৎপন্ন করে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে ১ ওয়াট শক্তিতে পৌঁছনোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বেটাভোল্ট। এমন শক্তিশালী এই ব্যাটারি মানবশরীরের কোনও ক্ষতি করবে না বলেই দাবি করেছে ওই সংস্থা। এমনকি, পেসমেকারের মতো জীবনদায়ী যন্ত্রেও এই পারমাণবিক ব্যাটারি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।