Hijab Row

হিজাবের জন্য দেশদ্রোহীর আখ্যা! ছাত্রীর অভিযোগ ফের উস্কে দিল শিক্ষা ক্ষেত্রে হিজাব বিতর্ক

উত্তর বিহারের মুজাফ্ফরপুরের এক কলেজছাত্রী অভিযোগ করেছেন যে, এক শিক্ষক রবিবার পরীক্ষা চলাকালীন তাঁকে হিজাব খুলতে জোর করেন। সেই ছাত্রী তাতে আপত্তি জানালে তাঁর উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এই শিক্ষক।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
জেহানাবাদ (বিহার) শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ১৩:০৬

আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিয়ে উঠল প্রশ্ন। এ বার ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। উত্তর বিহারের মুজাফ্ফরপুরের এক কলেজছাত্রী অভিযোগ করেছেন যে, এক শিক্ষক রবিবার পরীক্ষা চলাকালীন তাঁকে হিজাব খুলতে জোর করেন। সেই ছাত্রী তাতে আপত্তি জানালে তাঁর উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এই শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের মিথানপুরা এলাকায় অবস্থিত মহন্ত দর্শন দাস মহিলা কলেজে।

এই বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষা কানু প্রিয়া বলেন, ‘‘সেই ছাত্রীকে হিজাব পরা নিয়ে কোনও রকম বাধা দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র তাঁর কান খোলার জন্য বলা হয়।’’ সেই ছাত্রী আদৌ কানে কোনও রকম ব্লুটুথ ডিভাইস লাগিয়ে রেখেছেন কি না, তা নিশ্চিত করতেই এমনটা বলা হয়েছিল বলে দাবি অধ্যক্ষার। তিনি আরও বলেন, ‘‘এতে ছাত্রীর সমস্যা হলে তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বা আমাকে জানাতে পারতেন। কিন্তু তাঁর অন্য উদ্দেশ্য ছিল। তিনি স্থানীয় থানা এবং এলাকার লোকজনকে ফোন করেন। তাঁরা চলে আসায় পরিস্থিতি বিগড়ে যায়।’’

Advertisement

অধ্যক্ষা জানান, অভিযোগকারিণী ছাত্রী দাবি করেছেন যে, শিক্ষক তাঁকে দেশদ্রোহী বলে অভিহিত করেছেন এবং তাঁকে পাকিস্তানে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন। অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘আমি তখন পরীক্ষার হলে ছিলাম না, কিন্তু অন্য মেয়েরা পরীক্ষায় দিতে এসেছিলেন, তাঁরা জানান এমন কোনও কথোপকথন সেখানে হয়নি।’’

মুজাফ্ফরপুরের পুলিশ এই বিষয়টি দেখছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, তারা দুই তরফের মন্তব্যই শুনেছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। ছাত্রীর তরফে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।

হিজাব মামলায় কর্নাটক হাইকোর্টের রায় নিয়ে একমত হতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

হিজাব মামলায় কর্নাটক হাইকোর্টের রায় নিয়ে একমত হতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রতীকী ছবি।

এ দিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অধিকার বিষয়ক প্রশ্নটির এখনও কোনও মীমাংসা হয়নি। হিজাব মামলায় কর্নাটক হাইকোর্টের রায় নিয়ে একমত হতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলা অতঃপর উচ্চতর বেঞ্চে যাবে। কেউ হিজাব পরতে চাইলে তাঁকে বাধা দেওয়া চলে না— এই অভিমত বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার। বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তের অবস্থান ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় অনুষঙ্গ বা অভিজ্ঞান পরিধানের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিসরে তাদের নিজস্ব পোশাক বিধি সকলকে মেনে চলতে হবে।’’ অন্য দিকে, বিচারপতি ধুলিয়া জোর দিয়েছেন ব্যক্তিস্বাধীনতা বা স্বাধিকারের উপর। তাঁর মতে, হিজাব পরা বা না পরা মহিলার ব্যক্তিগত পছন্দের প্রশ্ন।

তার পরেই কর্নাটকের শিক্ষা মন্ত্রী বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিলেন, হাই কোর্টের রায়ই মেনে চলবে রাজ্যের সরকার। আগের মতোই কর্নাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ। মহিলাদের হিজাব প্রসঙ্গ নিয়ে সারা বিশ্ব তোলপাড়। সারা বিশ্বে মহিলাদের একটাই দাবি, অন্যান্য পোশাকের মতোই হিজাব পরার অধিকারও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপন্দ উপর নির্ভর করা উচিত। তারই মধ্যে দেশের আরও এক কলেজে এমন ঘটায় অনেকেরই নজর প়ড়েছে সে দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement