বিয়ের আগে রূপচর্চার সময় পাচ্ছেন সন্দীপ্তা? ছবি: সংগৃহীত।
টেলিভিশনের পর্দায় কত বার যে তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। তবে এ বার বাস্তবে সাত পাকে বাঁধা পড়তে চলেছেন অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন। আগামী ৭ ডিসেম্বর পেশায় কর্পোরেট চাকুরিজীবি পাত্র সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী। তারকা হোক কিংবা পাশের বাড়ির মেয়েটি— বিয়ের আগে দম ফেলার সময় থাকে না কারও। সন্দীপ্তারও নেই। কেনাকাটা থেকে বিয়ের আয়োজন, সব কিছুই নিজে হাতে করতে হচ্ছে। মাসখানেক বাকি থাকলেও, বিয়ের কাজ তো সহজে শেষ হওয়ার নয়। তার উপর শুটিং সামলে বিয়ের তোড়জোড়, আরও কঠিন। কী করে সব সামলাচ্ছেন সন্দীপ্তা? আনন্দবাজার অনলাইনকে হবু কনে বলেন, ‘‘এ মাসে কাজ অনেকটাই কম রেখেছি। কারণ, রোজ শুটিং করে এত বড় আয়োজন করা সম্ভব হবে না। একটা একটা করে কাজ এগোচ্ছি। আপাতত কেনাকাটায় মন দিয়েছি।’’
কনের ডায়েট
বিয়ে বলে কথা, তার আয়োজন তো কম নয়। জীবনের এই বিশেষ দিনটি নিয়ে সকলেরই অনেক স্বপ্ন থাকে। নতুন জীবনের শুভারম্ভ খানিক জমকালো না হলেও চলে না। ফলে একটা লম্বা প্রস্তুতি থাকে। এত কিছুর মধ্যেও নিজের কতটা যত্ন নিতে পারছেন অভিনেত্রী? তিনি বলেন, ‘‘নিজের যত্ন যে খুব নিতে পারছি এমন নয়। তবে চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব টেনশন কম নেওয়া যায়। ভিতর থেকে ভাল থাকার চেষ্টা করছি।’’ মঙ্গল বার প্রথম আইবুড়ো ভাত খেয়েছেন তিনি। আইবুড়ো ভাতের কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পাঁচ ভাজা, পঞ্চ ব্যাঞ্জনে সাজানো থরে থরে বাটি, মিষ্টি, আরও কত কী! সন্দীপ্তা যে খুব একটা খাদ্যরসিক নন, সে কথা কমবেশি সকলেই জানেন। তার উপর ওজন ধরে রাখার একটা বিষয় থাকে। বিয়ের আগে কি তাহলে সব নিয়ম ভাঙছেন তিনি? না কি নিয়মরক্ষার জন্য খাবার দাঁতে কাটছেন? সন্দীপ্তার সহাস্য উত্তর, ‘‘থালা সাজিয়ে খেতে দিচ্ছেন কাছের মানুষেরা। কিন্তু আমি এমনি অত খেতে পারি না। তবে পোলাও আর মাংস খেতে ভালবাসি। যাঁদের কাছে আবদার করা যায়, তাঁদের বলেছি পোলাও আর মাংস ছা়ড়া আর কিছু না রাখতে। আবার অনেককেই বলেছি, তোমাদের যা ইচ্ছা, সেটাই খাইয়ো।’’ আর শেষ পাতে মিষ্টি? মিষ্টি হেসে সন্দীপ্তার জবাব, ‘‘চেষ্টা করছি যতটা কম খাওয়া যায়।’’
কনের সাজগোজ
বাঙালি বাড়িতে বিয়ের মাসখানেক আগে থেকে রূপচর্চার একটা পর্ব চলে। বিউটি পার্লারে যাতায়াত তো থাকেই, সেই সঙ্গে ঘরোয়া টোটকাতেও ত্বকের যত্ন নেন অনেকে। সন্দীপ্তার কী পরিকল্পনা? অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘সত্যিই, আলাদা করে কিছু করছি না। সময় পাচ্ছি না। ঘন ঘন বিউটি পার্লারে যাওয়ার সময়ও নেই। তবে ভেবেছি বিয়ের কিছু দিন আগে একটা ফেশিয়াল করাবো।’’
‘ফিট’ফাট কনে
আর ফিট থাকার কথা কী ভাবছেন? জিমে বেশি ক্ষণ কাটাচ্ছেন তিনি? সন্দীপ্তা বলেন, ‘‘আমি তো আসলে জিমে যাই না। যোগাসন করি। সেটাই করছি। বিয়ের পূর্ব প্রস্তুতি বলতে এটুকুই।’’
হবু কনেদের জন্য
নভেম্বর-ডিসেম্বর মানেই বিয়ের মরসুম। অনেকেই এ সময়ে সাত পাক ঘুরবেন। বিশেষ দিনের জন্য হবু কনেদের কী পরামর্শ দেবেন তিনি? সন্দীপ্তা বলেন, ‘‘আমি নিজেই এই বিষয়ে অনভিজ্ঞ। ফলে আমার পরামর্শ কোনও কাজে লাগবে কি না, আমি জানি না। তবু বলব, বেশি করে জল খেতে। জল না খেলে সুস্থ থাকা সহজ নয়। বাইরে বেরোলে অবশ্যই সানস্ক্রিন মাখা জরুরি। সেই সঙ্গে যতটা উদ্বেগমুক্ত থাকা যায়, সেই চেষ্টা করুন। ভিতর থেকে ভাল থাকলে সৌন্দর্য বাইরে ফুটে ওঠে।’’ বিয়ের কনে মানেই ফর্সা টুকটুকে হতে হবে। পরতের পর পরত মেক আপ দিয়ে, বিয়ের আগে নানা রকম জিনিস ব্যবহার করে সেই চেষ্টাও চলতে থাকে। এই ধারণার ঘোর বিরোধী সন্দীপ্তা। ত্বকে একটা সাময়িক জেল্লা আনতে গিয়ে নানা রকম জিনিস ব্যবহার না করাই শ্রেয়। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তার চেয়ে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে নতুন জীবনে পা দেওয়ার খুশি, আনন্দ প্রাণভরে উদ্যাপন করলেই হবে। তা হলেই আর বিয়ের সন্ধ্যায় কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না।