Protect Skin from Pollution

ধুলো-ধোঁয়া, দূষণে চরম ক্ষতি হচ্ছে ত্বকের, রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমছে দূষিত রাসায়নিক, রেহাই পাওয়ার উপায় কী?

বাতাসের দূষিত কণা ত্বকের ক্ষতি করছে। তার উপর সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রভাব তো আছেই। কী কী করলে ত্বক সুরক্ষিত থাকবে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৪০
Tips to protect your skin from Air Pollution

দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচাবেন কী ভাবে, জেনে নিন উপায়। ছবি: ফ্রিপিক।

বাইরে থেকে ফিরেই দেখবেন, ত্বক কেমন চিটচিট করছে। টিস্যু পেপার আলতো করে এক বার গালের উপর বুলিয়ে নিন, দেখবেন পুরো টিস্যু পেপারটিই কালো হয়ে গিয়েছে। রাস্তার ধুলোময়লা, যানবাহনের ধোঁয়া, বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা এমন ভাবে আমাদের ত্বকে চেপে বসে, যে তা সহজে দূর হতে চায় না। ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্রে এই দূষিত কণাগুলি ঢুকে যায়। পরতে পরতে জমে, ত্বকের উপর কালো দাগ-ছোপ তৈরি করে। সেগুলি বার না করলে তা ব্রণ-ফুসকুড়ি, ত্বকের র‌্যাশের কারণ হয়ে ওঠে। তার উপর সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রভাব তো আছেই। ত্বক চিকিৎসক অতুল তানেজা জানাচ্ছেন, যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়ায় ‘নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড’ থাকে, যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই রাসায়নিক যাতে ত্বকে জমে থাকতে না পারে, সে জন্যই ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত। শুধু জল দিয়ে মুখ ধুলেই হবে না, আরও কিছু নিয়ম মানতে হবে। সেগুলি কী কী জেনে নেওয়া যাক।

Advertisement

১) ত্বক থেকে টক্সিন বার করুন

প্রথম কাজ হল ত্বককে আর্দ্র রাখা ও ত্বক থেকে দূষিত পদার্থগুলি বার করে দেওয়া। ত্বক চিকিৎসকদের মতে, তুলসীর পাতা ভেজানো জল ত্বকের ‘টক্সিন’ বার করে দিতে পারে। বাইরে থেকে ফিরে, তুলসী ভেজানো জলে মুখ ধুলে দূষিত পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। আমলকিও ত্বক পরিষ্কার করতে পারে। সে জন্য আমলকি খাওয়ার পাশাপাশি মুখে মাখাও যেতে পারে। একটি পাত্রে দই, মধু, এবং আমলকির রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি গলায় ও মুখে ভাল করে মেখে নিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। আমলকির সঙ্গে কাঁচা পেঁপে বাটা অথবা আমলকি ও হলুদের মিশ্রণও ত্বক পরিষ্কার ও সুরক্ষিত রাখে।

২) সানস্ক্রিন মাখতেই হবে

সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি ত্বকের জন্য ভাল নয়। একে তো দূষণ, তার উপরে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রভাবে আজকাল ত্বকের বিভিন্ন রকম অসুখ হচ্ছে। সংক্রমণজনিত রোগও ভোগাচ্ছে। ত্বকের ক্যানসারের কারণও কিন্তু অতিবেগনি রশ্মির অত্যধিক প্রভাব। সে জন্যই ত্বককে বাঁচাতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। অতুত তানেজার কথায়, এক বার নয়, পর পর দু’বার মাখতে হবে সানস্ক্রিন। প্রথম বার ভাল করে মুখে, গলায়, হাতে সানস্ক্রিন মেখে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। সানস্ক্রিন ত্বকে বসে গেলে আবারও মাখুন। এই ভাবে ত্বকের উপরে সানস্ক্রিনের দু’টি স্তর তৈরি হবে। এই দুই স্তর দীর্ঘ সময়ের জন্য ত্বককে সুরক্ষা দেবে।

৩) ধুলোময়লা তুলতে স্ক্রাব জরুরি

ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে দু’দিন অন্তর ‘এক্সফোলিয়েট’ বা ‘স্ক্রাব’ করা খুব জরুরি। তার জন্য অবশ্য সাঁলোতে গিয়ে একগাদা টাকা খরচ করতে হবে না। বাড়িতেই ঘরোয়া উপায়ে ‘স্ক্রাব’ বানিয়ে নিন। দূষণ থেকে ত্বক বাঁচাতে আাখরোটের স্ক্রাব খুব উপকারী। কয়েকটি আখরোট নিয়ে পিষে নিন। এ বার তাতে অল্প চিনি, এক চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন এই মিশ্রণ দিয়ে স্ক্রাব করলে ত্বকে ধুলোময়লা বসতে পারবে না।

৪) ফেসপ্যাক

যদি সময় থাকে তা হলে ঘুমোনোর আগে ফেসপ্যাক লাগিয়ে নিতে পারেন। যে হেতু ত্বক সারা রাত বিশ্রাম পায়, তাই ফেসপ্যাক লাগালে তার ফলও ভাল পাওয়া যায়। আপনার ত্বক তৈলাক্ত না শুষ্ক, সেই বুঝে ফেসপ্যাক বাছতে হবে। না হলে বাড়িতেই বানিয়ে নিন। গোলাপ জল এবং মুলতানি মাটি (স্বাভাবিক এবং তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে) কিংবা টক দই, মধু এবং পাকা কলা (শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে) একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’দিন এই প্যাক লাগাতে পারেন।

৫) ময়েশ্চারাইজ়ার মাখুন সঠিক উপায়ে

ময়েশ্চারাইজ়ার মাখলেই ত্বক পেলব ও মসৃণ থাকবে। যাঁদের রোজ বাইরে বেরোতে হয়, তাঁরা চেষ্টা করুন এমন ময়েশ্চারাইজ়ার কিনতে যাতে উগ্র গন্ধ নেই এবং প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। ব্রণর সমস্যা থাকলে ময়েশ্চারাইজ়ারে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড থাকতে হবে। ত্বক খুব শুষ্ক হলে চেষ্টা করতে হবে এমন ময়েশ্চারাইজ়ার কেনার, যাতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড বা গ্লিসারিন থাকে। প্রো-ভিটামিন বি আছে কি না, তা-ও দেখে নিতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন