মেকআপ দিয়ে চোখের তলার কালি ঢাকবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
বহু বার ‘রিল’ দেখে মেকআপ প্রসাধনীর সাহায্যে চোখের তলার কালি ঢাকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ডাল, তরকারি, উচ্ছে ভাজা, মাছের ঝোল এবং চাটনি একসঙ্গে মিশে গেলে যেমন হয়, অনেকটা তেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ দিকে, দিনের বেশির ভাগ সময়ে ল্যাপটপ কিংবা ফোনের পর্দায় চোখ রাখতে হয়। মুখে বললেও ‘স্ক্রিন টাইম’ কমাতে পারেন না। তার উপর রাত জেগে থাকার অভ্যাস তো আছেই। এই সবের ফল হল চোখের নীচে কালি। নামী-দামি ক্রিম থেকে ঘরোয়া টোটকা, টি-ব্যাগ কোনও কিছুতেই সুরাহা মেলেনি। শেষ পর্যন্ত মেকআপ প্রসাধনীর শরণ নিতে হয়েছে।
দোকানে গিয়ে কিংবা অনলাইনে ভাল-মন্দ বিচার করে বেশ কয়েকটি প্রসাধনী তো কিনে ফেলাই যায়। কিন্তু পেশাদার রূপটান শিল্পীদের মতো চোখের মেকআপ করা কি এতই সহজ? কার পর কোনটা মাখতে হবে, কত ক্ষণ রাখতে হবে, সে সব গোপন সূত্রের হদিস রইল এখানে।
১) ফোলা ভাব কমাতে প্রথমে চোখের চারপাশে ‘আইস প্যাক’ বুলিয়ে নিন। বরফের ঠান্ডা সহ্য করতে না পারলে ফ্রিজে রাখা টি-ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। কিছু ক্ষণ চোখের উপর রাখার পর হালকা করে আঙুল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে চোখের চারপাশে জমে থাকা ফ্লুইড সরে যাবে। ফোলা ভাব অনেকটাই কমবে।
২) চোখের চারপাশ যে হেতু খুব স্পর্শকাতর হয়, তাই মেকআপ করার আগে ভাল মানের ‘আই ক্রিম’ ব্যবহার করা জরুরি। তাতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। চোখ কিংবা ঠোঁটের চারপাশে বলিরেখা দেখতে পেলে বুঝতে হবে ত্বকে আর্দ্রতার অভাব হচ্ছে।
৩) চোখের কালচে ছোপের উপর কিন্তু ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যাবে না। তা হলে কালচে ছোপ বড়জোর ধূসরে পরিণত হবে। এই ছোপ ঢাকতে কমলা বা পিচ রঙের কারেক্টর ব্যবহার করেন পেশাদার রূপটান শিল্পীরা। খুব সামান্য পরিমাণে কারেক্টর নিয়ে ব্রাশের সাহায্যে চোখের কালির উপর বুলিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রসাধনীর স্তর যেন খুব পুরু না হয়।
৪) কারেক্টর ব্যবহার করার পর কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। যাতে তা পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। এ বার ত্বকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে কনসিলার বেছে নিন। চোখের তলায় অর্থাৎ কমলা রঙের কারেক্টর দেওয়া অংশটিতে প্রয়োজন মতো কনসিলার দিয়ে অংশটি পুরোপুরি ঢেকে ফেলতে হবে। কনসিলার মাখার পরেও তা শুকোনোর জন্য বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
৫) এ বার ফাউন্ডেশন দেওয়ার পালা। চোখের তলার কালি ঢাকতে যে দু’টি প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে, তবেই ফাউন্ডেশন মাখা যাবে। ত্বকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে চোখের তলায় বিন্দু বিন্দু ফাউন্ডেশন দিন। ভেজা মেকআপ ব্লেন্ডারের সাহায্যে ফাউন্ডেশন ত্বকে মিলিয়ে দিতে হবে। অনেকেই আঙুলের সাহায্যে মেকআপ ব্লেন্ড করেন। তবে, পেশাদার রূপটান শিল্পীরা বলছেন, নিঁখুত ভাবে মেকআপ করতে ব্রাশ বা মেকআপ স্পঞ্জ ব্যবহার করাই ভাল। বলিরেখার সমস্যা থাকলে হয়তো একটু বেশিই ফাউন্ডেশন লাগবে। নিজে বুঝে সেই পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে হবে।
৬) মেকআপ সেট করার জন্য সেটিং বা ‘বানানা’ পাউডার ব্যবহার করেন পেশাদার রূপটান শিল্পীরা। তবে, তার আগে চোখের তলায় ব্লটিং পেপার চেপে ধরতে অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন, ঘাম বা তেলতেলে ভাব টেনে নিলে তার পর পাউডার দেওয়া যেতে পারে। চোখের অন্য সাজসজ্জা করার আগে চোখের উপর ভাল করে সেটিং পাউডার বুলিয়ে নিন। অতিরিক্ত মনে হলেও ক্ষতি নেই।
৭) একেবারে শেষে কাজল, আইলাইনার, মাস্কারা বা আইশ্যাডো মাখার পর অতিরিক্ত পাউডার ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে নিলেই হবে। চোখ আঁকা শেষ হলে খানিক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। একবারে শেষে ফিক্সিং স্প্রে ছড়িয়ে দিতে হবে। তার পর হাওয়ায় শুকিয়ে নিলেই মেকআপ শেষ।