ডার্মাপ্লেনের খুঁটিনাটি। ছবি: সংগৃহীত।
মুখের অবাঞ্ছিত রোম কিংবা মৃত কোষ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েন অনেকে। এক্সফোলিয়েট করার পর ত্বক যতটা মসৃণ হওয়ার কথা ছিল, ঠিক তেমনটা হচ্ছে না। এই ধরনের সমস্যা দূর করতে ইদানীং সালোঁয় ‘ডার্মাপ্লেন’ ব্যবহার করছেন পেশাদার কর্মীরা। ত্বকচর্চার জগতে এই যন্ত্রটি ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাড়িতে এই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা কি আদৌ নিরাপদ?
শুধু মুখের অবাঞ্ছিত রোম নয়, ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্রে মৃত কোষ জমলেও নানা রকম সমস্যা হতে পারে। ‘ডার্মাপ্লেন’ এই ধরনের সমস্যায় দারুণ কাজ দেয়। ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনের হার বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই যন্ত্রটি। দেখতে অনেকটা ফেস রেজ়ারের মতো। দু’টিই ত্বকের উপরিভাগে কাজ করে। তবে ডার্মাপ্লেনের কাজ প্রায় নিখুঁত। ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ডার্মাপ্লেনিং-এ বিশেষ এক ধরনের সার্জিক্যাল ক্ষুর ব্যবহার করা হয়। যা সাধারণ রেজ়ারে থাকে না। রেজ়ার ব্যবহার করলে ত্বকে তেমন মসৃণ ভাবও আসে না।
‘রেজ়ার’ ছেড়ে ‘ডার্মাপ্লেন’ ব্যবহার করবেন কেন?
ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েট করার চাইতে শেভিং করা ভাল। চামড়ার উপর থেকে মৃত কোষের পরত উঠে যায় এই পদ্ধতিতে। পেশাদার রূপটান শিল্পীদের মতো মেকআপ করতে গেলেও ত্বক মসৃণ হওয়া প্রয়োজন। সেই কাজেও ডার্মাপ্লেন বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। অনেকে মনে করেন, শেভিং করলে মুখে রোমের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
‘ডার্মাপ্লেন’ যন্ত্রটি কি বাড়িতে ব্যবহার করা যায়?
ত্বকে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে এবং সঠিক পদ্ধতি জানলে ডার্মাপ্লেন বাড়িতে ব্যবহার করা যেতেই পারে। তবে, ত্বক যদি স্পর্শকাতর হয়, কিংবা তাতে যদি অ্যালার্জি বা চর্মরোগ জনিত সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটি ব্যবহার না করাই ভাল। ত্বকে কোনও রাসায়নিক ট্রিটমেন্ট করালেও ডার্মাপ্লেন ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়।
বাড়িতে কী ভাবে ব্যবহার করবেন ডার্মাপ্লেন?
১) ডার্মাপ্লেনিং করার আগে ত্বক ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। প্রয়োজনে ‘ডবল ক্লিনজ়িং’ পদ্ধতিতে ত্বক পরিষ্কার করুন। মুখে জমা তেল, ধুলোময়লা কিংবা মেকআপ তুলতে সাহায্য করে এই পদ্ধতি।
২) এ বার মুখে অ্যালো ভেরা জেল মেখে নিন। ত্বক আর্দ্র থাকলে ডার্মাপ্লেন চালাতে সুবিধা হবে। তবে খুব বেশি পরিমাণে না মাখলেও চলবে।
৩) এ বার এক হাত দিয়ে ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে মুখের উপর ডার্মাপ্লেনটি ধরুন। মুখের যে অংশে ডার্মাপ্লেন ব্যবহার করবেন, সেই জায়গাটি অন্য হাত দিয়ে টেনে ধরে রাখুন।
৪) এবার রেজ়ারের মতোই রোমের অভিমুখে ব্যবহার করুন ডার্মাপ্লেন। শেভিং করার মতো একসঙ্গে অনেকটা জায়গায় ডার্মাপ্লেন ব্যবহার করবেন না। ছোট ছোট অংশ চেঁছে নেবেন।
৫) নাক-চোখের চারপাশ, ভ্রু, চোয়ালের হাড়, ঠোঁটের উপরের অংশ বেশ স্পর্শকাতর। তাই এই সব জায়গায় ডার্মাপ্লেন চালানোর সময়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হয়।
৬) ডার্মাপ্লেনিং করার পর ত্বকে সামান্য জ্বালাভাব অনুভূত পারে। তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ঠান্ডা সেঁক, গোলাপ জল, অ্যালো ভেরা জেল কিংবা ক্যালামাইন লোশন মেখে নিলে এই ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।