সময়কে হার মানিয়ে এখনও ফ্যাশনে একই রকম প্রাসঙ্গিক কাঞ্জিভরম। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
একটি সোনারঙা কাঞ্জিভরম পরে নিজের প্রথম দক্ষিণ ভারতীয় ছবির প্রচারে এসেছিলেন জাহ্নবী কপূর। বলিউডের নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী জাহ্নবী। এ যুগের অভিনেত্রীরা সাধারণত কাঞ্জিভরমের মতো ‘ভারী শাড়ি’ পরেন না। জাহ্নবী কিন্তু তাঁর কাঞ্জিভরম শুধু সামলালেনই না, তা দিয়ে ফ্যাশনবিজ্ঞদের প্রশংসাও আদায় করে ছাড়লেন। মা হওয়ার বেশ কয়েক মাস আগে দীপিকা পাড়ুকোনেকেও একটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল লাল রঙের কাঞ্জিভরমে। বিদ্যা বালন আবার কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে হাজির হয়েছিলেন কাঞ্জিভরম শাড়ি পরে। আর রেখা! কাঞ্জিভরমের এমন একনিষ্ঠ ভক্ত বলিউড দু’টি পায়নি। যে কোনও অনুষ্ঠান, তা সে পুরস্কার প্রদানের হোক বা ভারতীয় ধনকুবেরের পুত্রের বিয়ে, রেখা হাজির হন কাঞ্জিভরম পরেই। অর্থাৎ, দক্ষিণ ভারতীয় এই সিল্কের শাড়িকে যতই অতিরিক্ত উজ্জ্বল এবং ঝলমলে বলে মুখ ফেরান এক শ্রেণির শৌখিনীরা, কাঞ্জিভরমের আবেদন কিন্তু শেষ পর্যন্ত আধুনিক ফ্যাশন পরিকল্পকেরাও এড়িয়ে যেতে পারেননি। বরং সময়কে হার মানিয়ে এখনও ফ্যাশনে একই রকম প্রাসঙ্গিক হয়ে থেকেছে কাঞ্জিভরম।
দক্ষিণী এই শাড়ি বাঙালিদের আলমারিতেও অল্পবিস্তর থেকে থাকে। কিন্তু কাঞ্জিভরম দিয়ে হালফ্যাশনের শৌখিনী হয়ে উঠবেন কী করে, জানতে হলে আগে জানতে হবে কত রকম কাঞ্জিভরম শাড়ি আছে—
১। ঐতিহ্যবাহী কাঞ্জিভরম: ঐতিহ্যবাহী যে কাঞ্জিভরম শাড়ি আমরা এত দিন দেখে এসেছি, তার মূল বৈশিষ্ট্য হল চওড়া পাড়। তাতে কখনও থাকে জরি বা সুতোর কাজ। কখনও থাকে না। শাড়ি জুড়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকে মুদ্রা বা চক্রের ‘মোটিফ’ বা প্রতীক। যা আদতে সমৃদ্ধি আর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কথা বলে।
২। কোরভাই কাঞ্জিভরম: কোরভাইয়ের বিশেষত্ব হল, এর জমি আর পাড় বোনা হয় সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে। ফলে শাড়িতে নানা রকম রংমিলন্তি তৈরি করা যায়। যা সচরাচর চোখে পড়ে না।
৩। টিস্যু সিল্ক কাঞ্জিভরম: ২০২৪ সালে টিস্যু সিল্ক কাঞ্জিভরমের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। তার কারণ ওই কাঞ্জিভরম অন্যান্য কাঞ্জিভরমের থেকে অনেক বেশি হালকা। ফলে গরমেও তা অস্বস্তির কারণ হবে না।
৪। জরি ব্রোকেড কাঞ্জিভরম: সাধারণত জরি ব্রোকেড শাড়ির জমিটাই হয় দেখার মতো। ছোট ছোট লতাপাতা, ফুল, ময়ূর বা মন্দিরের মোটিফ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জমির রঙের কাছাকাছি রঙের। তবে কখনও-সখনও বিপরীতধর্মী রংও ব্যবহার করা হয়।
৫। পাড়হীন কাঞ্জিভরম: নামেই বোঝা যায়, ঐতিহ্যবাহী নকশাকে বিদায় জানানোই এমন কাঞ্জিভরম বানানোর লক্ষ্য। যাতে ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতা মেশে।
৬। সোনা-রুপোর সুতোর কাঞ্জিভরম: সিল্কের সঙ্গে সোনা বা রুপোর তৈরি জরি মিশে তৈরি হয় থ্রেড ব্রোকেড কাঞ্জিভরম। তাই ওই নাম। বিশেষ ওই বুনন পদ্ধতি কাঞ্জিভরমের রংকে অন্য মাত্রা দেয়।
৭। পাট্টুপেট্টু কাঞ্জিভরম: চওড়া পাড়ে সূক্ষ্ম নকশা আর শাড়ি জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট বুটি। পাট্টুপেট্টু কাঞ্জিভরমকে বুটিদার বা বুটা কাঞ্জিভরমও বলেন অনেকে।