(বাঁ দিকে) সইফ আলি খান এবং করিনা কপূর খান, বাঙালি পোশাকশিল্পী অভিষেক রায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
সপরিবার দিওয়ালি পালন করবেন ‘নবাব’। তাই তাঁকে সাজাতে কলকাতা থেকে তড়িঘড়ি মুম্বই পাড়ি দিলেন বাঙালি পোশাকশিল্পী। ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। প্রতি বছরই সইফ আলি খান এবং করিনা কপূর খান বান্দ্রায় নিজেদের বাড়িতে জমকালো দিওয়ালি উদ্যাপন করেন। এ বছরও করেছেন। দিওয়ালিতে করিনা পরেছিলেন ফুলছাপ লাল শিফনের শাড়ি। সঙ্গে হাতকাটা লাল ব্লাউজ। খোলা চুল আর কপালে ছোট্ট টিপ। ছিমছাম সাজেই আলোর উৎসবে মোহময়ী লাগছিল তাঁকে। তবে করিনার পাশে এ বছর বাঙালি বেশে আলাদা করে নজর কাড়লেন সইফ। তাঁকে সাজানোর দায়িত্বে ছিলেন বাঙালি পোশাকশিল্পী কলকাতা নিবাসী অভিষেক রায়।
অভিষেকের বলিউডে অভিষেক হয়েছে আগেই। সম্প্রতি একটি হিন্দি ছবিতে পোশাকশিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। তবে বলিউডের প্রথম সারির কোনও অভিনেতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। অভিষেকের কাছে কী ভাবে এল এই সুবর্ণ সুযোগ? রবিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিষেক বলেন, ‘‘ কলকাতারই এক স্টাইলিস্টের মাধ্যমে সইফের সঙ্গে যোগাযোগ হয় আমার। পুজোর সময় হঠাৎই এক দিন সইফ হোয়াট্সঅ্যাপ করেন আমায়। তার পর ফোন করেন। গোটা বিষয়টি ১০ মিনিটের মধ্যে হয়ে গিয়েছিল। আমার ধাতস্থ হতেই খানিক সময় লেগেছিল।’’
দিওয়ালিতে সইফ সাবেকি সাজে সাজতে চাইছিলেন। সেই মতো বাঙালি পোশাকশিল্পীর খোঁজ করছিলেন। খুঁজতে খুঁজতেই অভিষেকের ফোন নম্বর পান। অভিষেকের কাজ দেখে পছন্দ হয়। তার পর নিজেই ফোন করেন। উচ্ছ্বাস মাখানো গলায় সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অভিষেক।
দশমীর পর থেকেই সইফের দিওয়ালির সাজ নিয়ে রীতিমতো উঠেপড়ে লাগেন অভিষেক। এক প্রকার কলকাতা-মুম্বই ডেলি প্যাসেঞ্জারিই করতে হয় তাঁকে। তাঁর কয়েক দিনের ঠিকানা হয়ে গিয়েছিল মুম্বই। সইফের বান্দ্রার বাড়িতেই পোশাকের ট্রায়াল চলছিল। অনেক পরিকল্পনার পরে শেষমেশ তৈরি হল সইফের পোশাক। কালো সিল্কের পাঞ্জাবি, সঙ্গে অফ হোয়াইট কটনের ধুতি। পাঞ্জাবিতে এমব্রয়ডারির কাজ করা। অভিষেকের পোশাকে দিওয়ালি পার্টিতে সইফ যেন একেবারে বাঙালি বাবু।
অভিষেকের কাজ পছন্দ হয়েছে সইফের। তাই সইফের রোজের ব্যবহারের জন্য পোশাক বানাচ্ছেন পোশাকশিল্পী। নিজে তো অভিষেকের পোশাকে সাজলেনই, নিজের দুই পুত্র তৈমুর আর জে-এর জন্যেও পোশাক বানানোর বরাত দিয়েছেন সইফ। ফলে সে সব নিয়ে এখন বেজায় ব্যস্ত বঙ্গতনয়।
বলিপাড়ায় বাঙালির দাপট কম নয়। ক্যামেরার সামনে থেকে পিছনে— সর্বত্র বাঙালির আনাগোনা। গঙ্গাপারের বাঙালি পোশাকশিল্পীর বলিউড অভিষেক ঘটেছে বহু বছর আগেই। বলিপাড়ার কন্যেরা বিয়ের মতো জীবনের বিশেষ দিনে রূপকথার গল্পের নায়িকাদের মতো সেজে উঠতে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের পোশাক বেছে নিয়েছেন। সব্যসাচী কি অভিষেকের অনুপ্রেরণা? অভিষেক বলেন, ‘‘নিশ্চয়। আমি তো চাই, যাতে ওঁর মতো কাজ করতে পারি। চেষ্টা করব আরও ভাল কাজ করার। নতুন কিছু করার।’’