ধাতু থেকেও অ্য়ালার্জি হয়, চুড়ি, ঘড়ি পরলেই র্যাশ হচ্ছে ত্বকে? কী করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
বেলা ১১টা বাজতে না বাজতেই লু বইছে। তাপমাত্রা বাড়ছে ক্রমশ। কাঠফাটা রোদে বেশি ক্ষণ বাইরে থাকলেই ত্বকে জ্বালা-চুলকানি হচ্ছে। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের ব্রণ-ফুস্কুড়ির সমস্যা বাড়ে এই সময়ে। অ্যালার্জির ধাত থাকলে, তা থেকে ত্বকে লালচে র্যাশ হতে পারে। বিশেষ করে ধাতুতে অ্যালার্জি থাকলে আংটি, চুড়ি বা ঘড়ির বেল্ট থেকেও অ্যালার্জি হয়। দুই হাত ভরে যায় ছোট ছোট ফুস্কুড়িতে। ত্বক খসখসে হয়ে যায়, অনেকের আবার আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে 'ডাইশিড্রোটিক এগজ়িমা'। যা ওষুধ বা মলমে চট করে সারে না।
‘মেটাল অ্যালার্জি’ থাকলে সোনা বা রূপা অথবা জাঙ্ক গয়না থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। ‘জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজি’-র তথ্য বলছে, সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থেকে আসার পর ত্বকে লাল লাল র্যাশ দেখা দিলে তা ‘সান অ্যালার্জি’ হিসাবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রভাবে ধাতব কিছু থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। এই সমস্যাকে 'ফোটোসেনসিটিভ ডিজ় অর্ডার' অথবা 'ফোটোডার্মাটোস'-ও বলা হয়।
আবার এগজ়িমার সমস্যাও হয় অনেকের। আঙুলের মাঝের ত্বকে, গলা, হাতের কনুই, হাতের কব্জিতে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এগজিমার অন্যতম লক্ষণ। একে বলে 'অ্যাটপিক ডার্মাইটিস'। এই ধরনের সমস্যা হলে গরমে কষ্ট আরও বাড়ে। স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম দিয়ে সাময়িক ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, তবে ত্বকের সংক্রমণ ঠেকাতে হলে ঘরোয়া উপাদানেই ভরসা রাখতে হবে। কারণ, ঘরোয়া উপকরণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ভয় কম।
গরমে কী ভাবে ত্বকের অ্যালার্জি বা এগজ়িমা থেকে বাঁচবেন?
কম ক্ষারযুক্ত সাবান
ভেষজ সাবানই ব্যবহার করা ভাল। অতিরিক্ত ক্ষার দেওয়া সাবান ব্যবহার করলে ও দিনে বেশি বার ব্যবহার করলে তা থেকে অ্যালার্জি বাড়বে।
ল্যাভেন্ডার তেল
ল্যাভেন্ডার তেল ত্বকের জ্বালা, চুলকানি, র্যাশ দূর করতে পারে। সোরিয়াসিসের সমস্যা থাকলেও এই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা যায়। এক কাপ জলে ৫-৬ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে তুলোয় করে র্যাশের জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। এতে জ্বালা-চুলকানি অনেক কমে যাবে।
পেপারমিন্ট তেল
যে কোনও ব্যথা, ক্ষত সারাতে কাজে লাগে পেপারমিন্ট তেল। যেখানে জ্বালা বা চুলকানি হচ্ছে, সেই জায়গায় এই তেল মালিশ করলে প্রদাহ কমে যায় চটজলদি। ব্যথার জায়গায় শীতল অনুভূতি এনে দেয় এই তেল।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
এক কাপ জলে ২-৩ ফোঁটা অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ তুলোয় করে নিয়ে র্যাশের জায়গায় লাগাতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি প্রদাহ কমে যাবে।
শিয়া বাটার মাস্ক
আধ কাপ শিয়া বাটারের সঙ্গে আধ কাপ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এ বার এই মিশ্রণে এক কাপ জল দিয়ে ভাল করে ফোটাতে হবে। ফুটে গেলে ঠান্ডা করে তাতে ১ চা-চামচ ভিটামিন এ তেল ও কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ স্নানের আগে নিয়মিত ত্বকে মাখলে এগজ়িমা বা র্যাশের সমস্যা কমে যাবে। ত্বকের অ্যালার্জিও সেরে যাবে।