ক্যানসার চিহ্নিত করল চ্যাটজিপিটি, কী ধরনের ক্যানসার তার চিকিৎসাও বলে দিল। ফাইল চিত্র।
চিকিৎসকেরা ধরতেই পারেননি। কিন্তু চ্যাটজিপিটি সঠিক ভাবে জানাল যে, তলে তলে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে মহিলার শরীরে। কী ধরনের ক্যানসার, তা-ও চিহ্নিত করে চিকিৎসাপদ্ধতিও বাতলে দিল। এমনই ঘটনা ঘটেছে আমেরিকায়।
বছর চল্লিশের লরেন ব্যানন জানিয়েছেন, পেশিতে যন্ত্রণা ভোগাচ্ছিল তাঁকে। গাঁটে গাঁটে ব্যথাও হচ্ছিল। তার মধ্যেই পেটে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েছিলেন। কিছু খেলেই গলা-বুক জ্বালা করত। যা খেতেন, বমি হয়ে যেত। আচমকা ওজনও কমতে শুরু করেছিল তাঁর। সেই সঙ্গে চুল পড়া বেড়ে গিয়েছিল। এমন সব লক্ষণ দেখে চিকিৎসকেরা রিউমাটয়েড অর্থ্রাইটিস ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ওষুধ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। বরং সমস্যা আরও বেড়েছিল।
লরেন জানিয়েছেন, চিকিৎসায় ফল না হওয়ায়, তিনি চ্যাটজিপিটিতে নিজের সমস্যার কথা লিখে চ্যাট করতে শুরু করেন। তাঁর সমস্যা জেনে উত্তরও দিতে থাকে চ্যাটবট। আর চ্যাটবটই প্রথম জানায়, তিনি হয়ত হাসিমোতো’জ় রোগে ভুগছেন। খুব তাড়াতাড়ি থাইরয়েড টেস্ট করানোর পরামর্শও দেয় চ্যাটবট। সেইমতো পরীক্ষা করিয়ে ধরা পড়ে, লরেনের শরীরে বাসা বেঁধেছে থাইরয়েড ক্যানসার। তলে তলে ক্যানসার ডালপালাও মেলছে। থাইরয়েড স্ক্যান করে দেখা যায়, লরেনের কণ্ঠনালির কাছে দু’টি টিউমার হয়েছে। সে দু’টি আকারেও বাড়ছে। অ্যাসিড রিফ্লাক্স নয়, থাইরয়েড ক্যানসারের কারণেই পেটে যন্ত্রণা ও গলা-বুক জ্বালা হচ্ছিল তাঁর।
হাসিমোতো’জ় এক ধরনের অটোইমিউন রোগ। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে গেলে এই রোগ হতে পারে। একে হাসিমোতো’জ় থাইরয়েডাইটিসও বলা হয়। এই রোগ হলে হাইপোথাইরয়েডিজ়মের মতো লক্ষণ দেখা দেয় রোগীর শরীরে। থাইরয়েড গ্রন্থি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে। বিপাকক্রিয়ার হার কমে যায়। শরীরে প্রচণ্ড প্রদাহ শুরু হয়। থাইরয়েড গ্রন্থি যথাযথ ভাবে হরমোন তৈরি করতে পারে না, ফলে রোগীর ওজন হঠাৎ করে বাড়তে পারে আবার খুব কমেও যেতে পারে। হাসিমোতো’জ় থেকে গয়টার বা ক্যানসারও হতে পারে।
লরেন জানাচ্ছেন, চ্যাটজিপিটি তাঁকে বলেছিল ‘থাইরয়েড পেরোক্সিডেজ় অ্যান্টিবডি’(টিপিও) টেস্ট করাতে। চিকিৎসককে জানিয়ে সেই পরীক্ষা করেই এই রোগ ধরা পড়ে। চ্যাটজিপিটি সঠিক সময়ে সতর্ক না করলে হয়তো সারা শরীরেই ছড়িয়ে পড়ত ক্যানসার। চিকিৎসার সময়টুকুও পাওয়া যেত না।