কোনও রকম কাটাছেঁড়া, অস্ত্রোপচার ছাড়াই ত্বকের ভোল বদলে দিতে পারে এস্থেটিক ট্রিটমেন্ট। ছবি: সংগৃহীত।
রোজের ব্যস্ততার মধ্যে আলাদা করে ত্বকের পরিচর্যা করার সময় পান না অনেকেই। অনেকে আবার রূপটানে মন দিলেও ত্বকের পরিচর্যার জন্য আলাদা করে সময় বার করেন না। যত্নের অভাব, দূষণ, অত্যধিক প্রসাধনীর কারণে অকালেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। জেল্লাহীন, অকালে বুড়িয়ে যাওয়া, নিষ্প্রাণ ত্বকে প্রাণ ফেরাতে পারে এস্থেটিক ট্রিটমেন্ট। কোনও রকম কাটাছেঁড়া, অস্ত্রোপচার ছাড়াই ত্বকের ভোল বদলে দিতে পারে এই চিকিৎসা পদ্ধতি। ব্রণর দাগ, ওপেন পোরসের সমস্যা, ত্বকের কালচে দাগছোপ দূর করতে, বলিরেখা ঢাকতে, এমনকি চামড়া টানটান করতেও এই চিকিৎসা পদ্ধতি কাজে আসে।
তবে এই প্রকার ট্রিটমেন্ট কী যে কোনও বয়সেই শুরু করা যায়? ইমেজ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা এবং এস্থেটিক ফিজিশিয়ান দেবশ্রী বণিক বললেন, ‘‘এস্থেটিক ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে বয়সের কোনও বাঁধা নেই। যাঁরা নিজেকে সুন্দর রাখতে চান, তাঁরা যে কোনও বয়সেই এই ট্রিটমেন্ট শুরু করতে পারেন। তবে কিছু নির্দিষ্ট ট্রিটমেন্ট আছে যেগুলি ত্বকে বয়সের ছাপ কমানোর জন্য করা হয়, সেগুলি মূলত ৩৫ বছরের উপরেই করানোর পরামর্শ দিই আমরা। পুজোর আগে ত্বকে চটজলদি গ্লো আনতে তারা বিভিন্ন রকম মেডি ফেশিয়াল করাতে পারেন। ১৫, ১৬ বছরের তরুণীরাও কিন্তু এই ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। যাঁদের সামনে বিয়ে তাঁদের ক্ষেত্রে বলব যে কোনও ট্রিটমেন্ট করানোর ক্ষেত্রে হাতে আড়াই থেকে তিন মাস সময় রাখবেন। এক ফেশিয়ালে চটজলদি গ্লো আসতে পারে তবে ত্বকের সমস্যাগুলি নিরাময় করতে হলে একাধিক সেশন দরকার হয়।’’
পুজোর আগে হাতে সময় বড় কম। এর মধ্যে ত্বকে চটজলদি জেল্লা আনতে কোন কোন মেডি ফেশিয়াল করানো যায়, দেবশ্রী দিলেন তার হদিস।
ও টু ডার্ম ফেশিয়াল
এই ফেশিয়ালে ত্বকে অক্সিজ়েন ব্যবহার করা হয়। একটি ডোম আকৃতির মাস্ক ব্যবহার করে ত্বকে অক্সিজ়েনের জোগান দেওয়া হয়। ডোমটি এমন একটি মেশিনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে যা বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি অ্যানিয়নও তৈরি করে। এই দুই উপাদান ত্বক সতেজ রাখে। ত্বকে নতুন কোষ উৎপাদন করতে, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে, পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে, বার্ধক্যের ছাপ কমাতে, ত্বকের ক্ষতিগ্রস্থ কোষগুলি নিরাময় করতে এই উপাদানগুলি কাজে আসে। ও টু ডার্ম ফেশিয়াল কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, ত্বককে ডিটক্সিফাই করে, ত্বক ময়শ্চারাইজ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়। ত্বক মোলায়েম করতে ও চটজলদি জেল্লা আনতে, সূর্যের ক্ষতি থেকে ত্বককে বাঁচাতে এই মেডি ফেশিয়াল করাতেই পারেন।
গোল্ড টোনিং উইথ হলিউড স্পেকট্রা
ত্বকে প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে এই ট্রিটমেন্টটি দারুণ কাজে আসে। এই ট্রিটমেন্টের ফলে ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্রগুলির (ওপেন পোরস) আকার ছোট করতে সাহায্য করে, ত্বকের জেল্লাও বাড়িয়ে তোলে। এই ট্রিটমেন্টের ফলে ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ফলে ত্বক টানটান দেখায়। ত্বকের দাগ-ছোপ দূর করতেও এই ট্রিটমেন্টটি দারুণ উপকারী। হলিউড স্পেকট্রা ডিভাইস ব্যবহার করে গোল্ড টোনিং ট্রিটমেন্টের করানো হয়, যার মাধ্যমে মেলাসমা, হাইপারপিগমেন্টেশন, পিগমেন্টেড ক্ষত, ব্রণের দাগ এবং অস্ত্রোপচার পরবর্তী দাগগুলির করার জন্য এই ট্রিটমেন্টটি করানো যেতে পারে।
হাইড্রা ফেশিয়াল
এই ফেশিয়ালে বিশেষ ভ্যাকুয়াম যন্ত্রের সাহায্যে রোমকূপের ভিতর থেকে মৃত কোষগুলিকে নিষ্কাশন করা হয়। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে, চটজলদি জেল্লা আনতে, ত্বক আর্দ্র রাখতে এই ফেশিয়াল বেশ উপকারী। ব্ল্যাকহেড্স দূর করে ত্বককে মসৃণ রাখে।
এ ছাড়াও ত্বকে জেল্লা আনার জন্য ত্বকে কেমিকাল পিলিং, স্কিন বুস্টিং, লেজ়ার থেরাপি করানো যায়। ৫,০০০ টাকা থেকে মেডিফেশিয়াল শুরু হয়।