যত্ন না নিলে রুক্ষ, খসখসে হয়ে যাবে চুল। ছবি: সংগৃহীত।
মা-দিদিমার পুরনো ছবি দেখলে মনে সাধ হয়, যদি এমন এক ঢাল ঘন লম্বা চুল হত! পিঠের উপর দিয়ে বেয়ে কোমর পর্যন্ত ঢেউ খেলানো চুল এখন প্রায় দেখাই যায় না। রোজের ব্যস্ততায় চুল বা ত্বকের যত্ন নিতে আমরা স্যাঁলোতে ছুটি। বাজারচলতি ক্রিম, শ্যাম্পুর রাসায়নিকের জেরে ত্বকের তো বারোটা বাজেই, চুলও হয়ে ওঠে রুক্ষ, খসখসে। মাথায় চিরুনি ঠেকালেই গোছা গোছা চুল ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু চুলে প্যাক লাগালে হবে না, ডায়েটেও রাখতে হবে এমন কিছু, যাতে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। চুলের গোছ যদি পাতলা হয়ে যায়, তা হলে দেরি না করে রোজের ডায়েটে রাখুন ‘এবিসিজি জুস’। চুল পড়া বন্ধ তো হবেই, ভিতর থেকে চুলের গোড়াও মজবুত হবে। মাথার স্ক্যাল্পে চুলকানি, খুসকির সমস্যা থাকলে তা-ও দূর হবে।
এবিসিজি জুস কী?
অনেকেই হয়তো নাম শুনে থাকবেন। আমলকি, বিট, গাজর ও আদার রস হল ‘এবিসিজি জুস’। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই চার রকম রস মিশিয়ে খেলে তা শরীরের জন্য খুব উপকারী। চুল শুধু নয়, ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। আমাদের চুল তৈরি হয় কেরাটিন আর অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে। চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তাই প্রোটিন দরকার হয়। কিন্তু আমরা অল্প সময়ে চুল ঘন, উজ্জ্বল দেখাতে এমন ধরনের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, হেয়ার প্যাক, হেয়ার ডাই ব্যবহার করি, যাতে রাসায়নিকের মাত্রাই বেশি। তাছাড়া পরিবেশের দূষণ, আবহাওয়ার বদলের কারণেও চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়। সে জন্যই এমন কিছু খেতে হবে, যা প্রাকৃতিক এবং কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ হয়ে উঠবে না। এবিসিজি রস সে ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
কী ভাবে বানাবেন?
আমলকী-২টো
বিট- ২টো
আদা কুচি
কারি পাতা-৬টা থেকে ৮টা
এক গ্লাস জল
সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে মিক্সিতে রস করে নিন।
আমলকিতে আছে ভিটামিন সি, বিটে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, আয়রন, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম যা চুলের গোড়া মজবুত করে। কারি পাতায় ভিটামিন, এ, বি ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে যা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, কোষের পুষ্টি জোগায়। আদা ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। আদার রস এই মিশ্রণে দিলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে, ফলে চুলের গোড়া আরও মজবুত হবে। খুশকির সমস্যা থাকলে তা দূর হবে। এই রস সপ্তাহে তিন দিন খেতে পারেন। তা হলেই দেখবেন, চুল খুব তাড়াতাড়ি বাড়ছে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। অনেকেরই বিভিন্ন রকম সব্জিতে অ্যালার্জি থাকতে পারে। তাই ‘এবিসিজি জুস’ আপনার জন্য ঠিক কিনা তা খাওয়ার আগে পু্ষ্টিবিদের থেকে জেনে নিন।