ত্বকের জন্য ডাবের জল ভাল? ছবি: সংগৃহীত।
বসন্ত বা ‘পক্স’ সেরে যাওয়ার পর সারা গায়ে, মুখে তার গুটির ছাপ রেখে গিয়েছিল। সেই দাগ তুলতে কত কী না করা হয়েছিল। শেষে ঠাকুমার দেওয়া টোটকায় গুটির দাগ অনেকটাই মিলিয়ে যায়। কী সেই টোটকা? ডাবের জল!
গরম কালে প্রায় রোজই ডাব খাওয়া হয়। তা অবশ্যই শরীর আর্দ্র রাখার জন্য। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণের জন্য। এ ছাড়া বসন্ত বা ‘পক্স’ নিরাময়ের পর তার গুটির দাগ তোলা থেকে শুরু করে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায় ডাবের জল থেকে।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডাবের জল খেলে যেমন শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ হয়, তেমন ভিতর থেকে ত্বক ভাল রাখতেও সাহায্য করে। ডাবের জল খাওয়া এবং মাখা— দু’টিই খুব কাজের। তবে তার প্রভাব এক এক ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে এক এক রকম।
১. অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক
নিয়মিত ডাবের জল খেলে শুষ্ক ত্বক পেলব হয়। ডাবের জলে নানা ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে ত্বকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং প্রাকৃতিক কিছু শর্করা। এ ছাড়া এই পানীয়টি প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইটের উৎস। যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। ডাবের জল মাখলে ত্বকের শুষ্কতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. ব্রণ বা ব্রণের দাগ
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডাবের জলে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানগুলি ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে পারে। ব্রণ থেকে হওয়া ক্ষত সারাতেও দারুণ ভাবে কাজ করে এই পানীয়টি। মুখে কোনও রকম ক্ষতের দাগ নিরাময়ে ডাবের জল এবং হলুদের মিশ্রণও বেশ উপকারী।
৩. ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে
২০১৫ সালে হওয়া একটি গবেষণা থেকে জানা যায় ডাবের জলের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি শরীরে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। যা শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে। বলিরেখা, কালচে ছোপ, মেচেতার মতো বয়সজনিত উপসর্গগুলিও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই পানীয়ের মধ্যে ভিটামিন সি এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকায় ত্বকের জেল্লাও বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ডাবের জলে রয়েছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। যা ত্বকের নিজস্ব প্রোটিন তৈরি অর্থাৎ কোলাজেন সিন্থেসিস প্রক্রিয়াতেও সাহায্য করে। শরীর থেকে ‘টক্সিন’ বা দূষিত পদার্থ দূর করতেও এই পানীয়ের জুড়ি মেলা ভার। তাই খাওয়ার পাশাপাশি ডাবের জল মাখতেও বলেন রূপটান শিল্পীরা।
মুখে ডাবের জল কী ভাবে মাখবেন?
ডাবের জলে তুলো ভিজিয়ে মুখে বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে। গোলাপ জল এবং ডাবের জল সমপরিমাণে মিশিয়ে ‘টোনার’ হিসাবে মুখে স্প্রে করা যেতে পারে। আবার, মুখে মাখার কোনও প্যাকের মিশ্রণেও ডাবের জল ব্যবহার করা যায়।