শরীরের মেদ ঝরাতে কেন জিমে না গেলেও চলবে? ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
অনেকেই মনে করেন, জিমে গিয়ে ভারী ওজন তোলা কিংবা ট্রেডমিলে ঘাম ঝরানোকেই শুধু শরীরচর্চা বলে। কিন্তু শরীরের গড়ন ধরে রাখা, বাড়তি মেদ ছেঁটে ফেলার একমাত্র উপায় জিম নয়। জিমে যাওয়ার সময় না থাকলে অন্যান্য শারীরিক কসরতের মাধ্যমেও কিন্তু শরীর চাঙ্গা রাখা যায়।
হাঁটা, জগিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা তার মধ্যে অন্যতম। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার অভ্যাস শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, মাংশপেশির গঠন এবং শরীরের ভারসাম্য দৃঢ় করতে খুবই কার্যকর। বেশি ক্যালোরি ঝরানো এবং পেশির টোনিংয়ে সাহায্য করে এই কসরত। তাই লিফ্ট কখন আসবে, তার জন্য অপেক্ষা না করে সারা দিনে কয়েক বার খুব সাধারণ এই কসরত করলে হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়ে। হাঁটুর মাংসপেশি মজবুত হয়। আর কী কী উপকার মেলে এই কসরত করলে?
১. সমতল ভূমিতে দৌড়নো কিংবা হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় শরীরের মাংসপেশিগুলি বেশি সক্রিয় থাকে। সমতলে হাঁটার সময় শুধুমাত্র পায়ের পেশিই সক্রিয় থাকে। তবে সিঁড়িতে চড়ার সময় আপনার নানা রকম পেশি একসঙ্গে কাজ করে। মেদমুক্ত পেশির জন্য এটি খুব কার্যকর একটি কসরত।
২. ওজন নিয়ে চিন্তিত? ছিপছিপে শরীর পেতেও এই ব্যায়ামের উপর ভরসা রাখতে পারেন। এই ব্যায়ামে কিন্তু ভালমাত্রায় ক্যালরি ঝরে। আর ক্যালরির খরচ হলেই কিন্তু শরীরের মেদ কমতে শুরু করে।
৩. সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হৃদ্যন্ত্র ভাল থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই ব্যায়াম উপকারী। এই কসরতের ফলে ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এবং হৃদ্স্পন্দন স্বাভাবিক থাকে।
৪. সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। রক্ত সঞ্চালন ভাল হলে হরমোন গ্রন্থি থেকে ভাল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। যার ফলে মানসিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। মনমেজাজও ভাল থাকে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হলে মস্তিষ্কেও রক্ত ঠিকঠাক পৌঁছয়। মাইগ্রেনের মতো সমস্যা থেকে রেহাই মেলে।
৫. দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগলে, এই ব্যায়াম নিয়মিত করে উপকার পেতে পারেন। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধের পাশাপাশি এই কসরতেও নজর দিলে ভাল।
মানতে হবে সঠিক নিয়ম
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় আপনার ভঙ্গিমা যেন ঠিক থাকে। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। সামনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। শুরুতেই তাড়াহুড়ো নয়। ধীরে ধীরে শুরু করুন এবং পরে গতি বাড়ান। এই কসরতের জন্য সঠিক স্পোর্টস শু প্রয়োজন। যে কোনও জুতো পরে এই কসরত করলে পায়ে টান ধরা বা চোট লাগার আশঙ্কা থেকে যায়।
তবে সাবাধান
প্রতিবেদনটি শরীরের বাড়তি মেদ নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতেই লেখা। কোনও ‘ক্রনিক’ বা জটিল অসুখ থাকলে কিংবা বাতের সমস্যা থাকলে এই কসরত করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।