ভাতঘুমের ভালমন্দ ব্যাখ্যা করল নাসা। ছবি: ফ্রিপিক।
দুপুরে খাওয়া শেষ হল কি হল না, চোখ ঘুমে ঢুলে আসে? দুপুর ওই ১টা থেকে ৪টে অবধি ঘুমটা বেশ গভীরই হয়। ছুটির দিনে এই ভাতঘুমটা না দিলে ঠিক জমে না। আর বাঙালি বাড়িতে দুপুরে খেয়ে একটু জিরিয়ে নেওয়ার অভ্যাস আছেই। মা-ঠাকুরমারা খাওয়ার পরে ছোটদের খানিক ঘুমিয়ে নিতেই বলতেন। এই যে ভাতঘুম দেওয়ার অভ্যাস, তা কি ভাল?
ভাতঘুমের ভালমন্দ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলেন এই অভ্যাস বেশ স্বাস্থ্যকর, কারও মতে খেয়েদেয়ে ঘুমোনো মোটেই ঠিক নয়। অফিসে কাজ করার সময় দেখবেন, টিফিনের সময়টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেই ঘুম বেশ জাঁকিয়েই আসে। নাসার বিজ্ঞানীরা কিন্তু একে খারাপ বলে মানতে রাজি নন। তাঁরা বলছেন, দুপুরে খেয়ে ঘুমিয়ে নিলে কাজ করার শক্তি আরও বাড়ে, ক্লান্তি কেটে যায়। তবে ঘুমোনোর নিয়ম আছে। ভারী খাবার খেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমোলে চলবে না। ঘুমোতে হবে মাত্র ৩০ মিনিট। তাতেই শরীরের ক্লান্তি দূর হবে, মস্তিষ্কও ঠিকমতো কাজ করবে। দেখা গিয়েছে, বিমান চালান যাঁরা, তাঁরা যদি ২৬ মিনিটের ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নেন, তা হলে তাঁদের দক্ষতা আরও ৩৪ শতাংশ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে মনঃসংযোগও বাড়ে।
ভাতঘুম নিয়ে গবেষণা আরও হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমোনোর অভ্যাস স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়। ঠিকমতো ঘুম না হলে শরীরে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। বরং ঘুমোলে মনমেজাজ শান্ত থাকে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, পিসিওডির সমস্যা থাকলে দুপুরে মিনিট তিরিশেকের জন্য বিশ্রাম নেওয়া ভাল। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে দুপুরে কিছুটা সময়ের জন্য গড়িয়ে নেওয়া ভাল।
তবে ঘুমোতে হবে ওই ৩০ মিনিটই। এর চেয়ে বেশি হয়ে গেলে তখন ক্লান্তি কমার চেয়ে বাড়বে। অম্বলের সমস্যা হবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, খেয়ে উঠে আগে ১৫ মিনিটের মতো হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে নিলে ভাল হয়। তার পর বিশ্রাম নিন। এতে খাবারও হজম হবে এবং বাড়তি ক্যালোরিও জমবে না শরীরে।