রাজস্থানের দু’শো বছরের পুরনো দুর্গে বিয়ে করলেন অদিতি রাও হায়দরি এবং সিদ্ধার্থ সূর্যনারায়ণ। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
বলেইছিলেন ‘ম্যাজিক আর ভালবাসা এখনও ফুরোয়নি’। অদিতি রাও হায়দরি এবং সিদ্ধার্থ সূর্যনারায়ণের অনুরাগীদের সেই ইঙ্গিতই যথেষ্ট ছিল। তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, মন্দিরে পরিবারের উপস্থিতিতে সামাজিক বিয়ে আর তার পরে ফিল্মজগতের তারকাদের সাক্ষী রেখে সাদামাঠা আইনি বিয়েতেই অদিতি-সিদ্ধার্থের বিয়ের উদ্যাপন শেষ হচ্ছে না, পিকচার অভি বাকি হ্যায়। অদিতি-সিদ্ধার্থের বিয়ের ধমাকাদার অনুষ্ঠানের জন্য চলছিল অপেক্ষা। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটালেন অভিনেত্রীই। ইনস্টাগ্রামে বিয়ের তৃতীয় অনুষ্ঠানের ছবি দিলেন অভিনেত্রী। দেখা গেল বলিউডের বহু তারকাদম্পতির অনুসারী হয়ে অদিতি-সিদ্ধার্থও ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করেছেন। বহু দম্পতির মতো বিয়ের পোশাকের জন্য তাঁরাও বেছে নিয়েছেন বলিউডের প্রিয় বিয়ের পোশাকের নকশাকার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়কে। তবে মিল বলতে ওটুকুই। তবে অনেক বিষয়েই বলিউডি বিয়ের বাঁধা গৎ ভেঙেছেনও তাঁরা।
নিমতলায় মণ্ডপ!
অদিতি-সিদ্ধার্থ তাঁদের ডেস্টিনেশেন ওয়েডিংয়ের জন্য বেছে নিয়েছিলেন রাজস্থানের বিষাণগড়ের ২৩০ বছরের পুরনো আলিলা দুর্গ। আরাবল্লির নয়নভিরাম দৃশ্যপটে আঁকা ছবির মতো রাজস্থানের ওই দুর্গ বিখ্যাত তার ঐতিহ্যবাহী শিল্পনিদর্শনের জন্য। তবে অদিতি-সিদ্ধার্থ দুর্গের কোনও প্রাসাদোপম কক্ষে বিয়ের মণ্ডপ বাঁধেননি। বরং দুর্গের ধূসর পাঁচিলের গা ঘেঁষে এক বিরাটদেহী নিমগাছের নীচে মালাবদল করেছেন দু’জন।
রজনীগন্ধার মালা
মন্দিরে যাগযজ্ঞ করে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কাগজে সইসাবুদের বিয়েও হয়েছে। অদিতি এবং সিদ্ধার্থের তৃতীয় বিবাহ অনুষ্ঠানে দু’জনকে দেখা গেল মালাবদল করতে। তাঁদের গলায় ছিল জুঁই এবং অন্য নানা রকম সাদা ফুলের গোড়ের মালা। তবে বিয়ের মণ্ডপ সাজানো হয়েছিল অগুনতি রজনীগন্ধার মালা দিয়ে।
ছিমছাম পোশাক-গয়না
তারকাদের বিয়ের পোশাক হয় জমকালো। দীপিকা পাড়ুকোন থেকে শুরু করে অনুষ্কা শর্মা, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, আলিয়া ভট্ট, নয়নতারা এঁদের প্রত্যেকেরই বিয়ের পোশাক এবং গয়না ছিল জমকালো। এঁদের মধ্যে আলিয়ার পোশাক আর গয়না ছিল তুলনায় ছিমছাম। কিন্তু অদিতির পোশাকের অনাড়ম্বর ভাব আলিয়াকেও টেক্কা দিয়েছে। নকশাহীন একরঙা একটি ফুলহাতা ব্লাউজ় পরেছেন অদিতি। সঙ্গের অরগ্যানজ়ার ওড়নাটিতেও কোনও নকশা নেই। শুধু রয়েছে হালকা সোনালি নরুন পাড়। অদিতির লাল লেহঙ্গার যাবতীয় নকশাও সীমিত ছিল চওড়া পাড়ে। এর সঙ্গে অদিতি পরেছিলেন একটি মাত্র চোকার হার, ঝুমকো দুল, নথ এবং মাথাপট্টি। হাতে চুড়িও পরেননি অদিতি। অন্য দিকে সিদ্ধার্থ পরেছিলেন নকশাহীন ক্রিমরঙা সিল্কের শেরওয়ানি-চুড়িদার আর সাদার উপর সাদা কাজ করা অরগ্যানজ়ার শাল। গলায় অবশ্য সাত ছড়া মুক্তোর হার পরেছিলেন সিদ্ধার্থ। দু’জনেরই পোশাক এবং গয়না তাঁরই নকশা করা বলে জানিয়েছেন সব্যসাচী।
চুপিসারে বিয়ে?
সাধারণত বলিউডের তারকাদের ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের খবর চাউর হয়ে যায় অনেক আগে থেকেই। আমন্ত্রিত তারকাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনো থেকে শুরু করে সেখানে প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে তাঁদের পোশাক-আশাক কার্যকলাপ— সবই ছবিশিকারি মারফত ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে। এ ক্ষেত্রে তেমন হয়নি। অদিতি-সিদ্ধার্থ নিজেরাই বিয়ের ছবি দিয়ে চমকে দিয়েছেন। অনুরাগীদের মনে তাই প্রশ্ন, অতিথিদের নিয়ে কি তবে বিয়ের একটা চতুর্থ অনুষ্ঠানও করবেন অদিতিরা? বিয়ের ছবির ক্যাপশনে যদিও তেমন কোনও ইঙ্গিত দেননি অদিতি বা সিদ্ধার্থ। তাঁরা শুধু লিখেছেন, ‘‘জীবনে যদি কিছু ধরে থাকতে হয়, তবে একে অপরকে ধরে রাখাই সবচেয়ে ভাল।’’