Ami Arts Festival 2024

২৫০ শিল্পীর কাজ নিয়ে শুরু উৎসব, সুর-তালে সূচনা করলেন পরমব্রত-পিয়া

সাহিত্য-শিল্পের শহর বলেই পরিচিত কলকাতা। সেই শহরেই এ বার এক মাস ধরে চলবে ‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল’। তারই সূচনা হল বৃহস্পতিবার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪৪
‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল’-এর সূচনা অনুষ্ঠানে পরম-পিয়ার যুগলবন্দি।

‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল’-এর সূচনা অনুষ্ঠানে পরম-পিয়ার যুগলবন্দি। নিজস্ব চিত্র।

শীতের শুরুতে সংস্কৃতির শহর কলকাতায় শিল্পীদের নিয়ে উৎসবের উদ্যোগ। নাচ, গান, প্রদর্শনী, থিয়েটার নিয়ে এক বহুমুখী আঙ্গিকের সেই উৎসবের পোশাকি নাম ‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল’। সমষ্টিগত উদ্‌যাপন, এ ভাবেই উৎসবকে সংজ্ঞায়িত করি আমরা। শিল্পের এই কর্মযজ্ঞে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ হোক স্বতঃস্ফূর্ত, এমন ভাবনাকে সামনে রেখে ‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর আয়োজন করল কেসিসি। উদ্দেশ্য, বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম আরও বেশি করে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। উদীয়মান শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করা।

Advertisement

বৃহস্পতির সন্ধ্যায় আনন্দপুরে কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটিতে এক আনন্দমুখর অনুষ্ঠান দিয়ে তারই সূচনা হল। কবিতা, গল্প, সুরে— উদ্বোধনেই শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং পিয়া চক্রবর্তী। প্রথম বার জনতার দরবারে আনুষ্ঠানিক ভাবে সঙ্গীত পরিবেশন করলেন যুগল।

তবে তার আগে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা করেছিলেন কেসিসি-র চেয়ারপার্সন রিচা আগরওয়াল। উপস্থিত ছিলেন, নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়, ইতিহাসবিদ রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী পরিচালক সুদেষ্ণা রায় এবং অভিজিৎ গুহ, সঙ্গীত শিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র প্রমুখ।

কেসিসি-তে উৎসবের সূচনায় উপস্থিত গুণীজনেরা।

কেসিসি-তে উৎসবের সূচনায় উপস্থিত গুণীজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

রিচা জানালেন, ২১ নভেম্বর, বছর ছয়েক আগে এই দিনটিতে শিল্পচর্চা, শিল্পের প্রসারের তাগিদে পথ চলা শুরু করেছিল কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটি। এই দিনেই পঞ্চম বারের জন্য ‘আমি আর্টস ফেস্টিভ্যাল’- সূচনা হল। এ দিন যে উৎসবের সূচনা হল, তা কোনও একক স্থানে নয়, বরং শহর কলকাতার বিবিধ স্থানে আগামী এক মাস ধরে উদ্‌যাপিত হবে। সেই তালিকায় থাকছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, ভারতীয় জাদুঘর, জিডি বিড়লা সভাঘর, কেসিসি, টেকনো ইন্ডিয়া, প্রিয়া সিনেমা।

দেশ-বিদেশের ২৫০ জন শিল্পী এতে অংশ নেবেন। চিত্র প্রদর্শনী, সঙ্গীতানুষ্ঠান, নাটক— সমস্ত কিছুরই আয়োজন করা হয়েছে। ভারতীয় জাদুঘরে এক সপ্তাহ ধরে পালন করা হবে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী সপ্তাহ’। ২২-২৯ ডিসেম্বর সেখানে বিভিন্ন শিল্পীর কাজ দেখতে পাবেন। কেসিসি-র চেয়ারপার্সন রিচা বললেন, ‘‘আমরা এই উৎসবের মাধ্যমে এমন এক মঞ্চ তৈরি করেছি, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নিজের শিল্পসত্তাকে প্রকাশ করতে পারবে। এই শিল্পোৎসবের দ্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত।’’

শুধু শিল্পকর্ম দেখা নয়, তা কেনার শখও হয় কারও। অনেক সময়ে নামী শিল্পীদের শিল্পের কদর করতে পারলেও মূল্যের জন্য চাইলেও তা নিজের সংগ্রহে রাখতে পারেন না অনেকে। তবে ইচ্ছা যাতে পূরণ হয়, সেই ভাবনা থেকে ১১-১৭ ডিসেম্বর আয়োজন হচ্ছে বিশেষ মেলার, যার উদ্দেশ্য শিল্পকে নাগালের মধ্যে এনে দেওয়া। এরই নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাফর্ডবেল আর্ট ফেয়ার’।

হারিয়ে যেতে বসা বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহে  সেজে উঠেছে  কেসিসি-র আর্ট গ্যালারি।

হারিয়ে যেতে বসা বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহে সেজে উঠেছে কেসিসি-র আর্ট গ্যালারি। —নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন জেলা, শহরের শিল্পীদের হস্তশিল্প, পোশাক-সহ বিভিন্ন রকম জিনিস বিক্রির জন্য ব্যবস্থা হচ্ছে ‘কারিগরি’র। ১৯-২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে মেলাটি।

এক দিকে যখন মেলার আয়োজন, অন্য দিকে, শহরের আর এক প্রান্তে আয়োজন করা হয়েছে সঙ্গীতানুষ্ঠানের। ১৪-২১ ডিসেম্বর ১০টি ব্যান্ড অনুষ্ঠান করবে।

এই যে শহর জুড়ে শিল্প নিয়ে চর্চা, উৎসব, উদ্‌যাপন— তা ঠিক কেমন চোখে দেখলেন পরমব্রত-পিয়া? উৎসবের উদ্বোধন তো হয়েছে তাঁদেরই সুরেলা কণ্ঠে। অভিনেতার কথায়, ‘‘কলকাতাকে আমরা শিল্প, সাহিত্যের শহর বলি। কিন্তু কোথাও যেন তা নির্দিষ্ট পরিধি বা গণ্ডিতে আটকে ছিল। এখন শহরের বুকে বিভিন্ন স্থানে যে ভাবে তা ছড়িয়ে পড়ছে, তার একটা বড় মাহাত্ম্য আছে। এ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এমন ধরনের উৎসব-অনুষ্ঠান হয়ই। বিশ্বের নানা প্রান্তেও হয়। সেই মানচিত্রে যদি কলকাতা কোথাও উঠে আসে, সেটা হবে সবচেয়ে বড় পাওনা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement