Fake App

বিমানবন্দরের লাউঞ্জে অপেক্ষা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেক যাত্রী! কী পদ্ধতিতে প্রতারণা চলছে?

‘লাউঞ্জ পাস’ নামে এক ভুয়ো অ্যাপ ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। হোয়াট্‌সঅ্যাপ ও অন্যান্য সমাজমাধ্যমে এই অ্যাপের লিঙ্কটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে বিমানবন্দরে লাউঞ্জ বুক করতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:২১
A new scam Targets Air Travelers via Fake lounge pass app

দু’মাসে ৪৫০ জন যাত্রী বিমানবন্দরে প্রতারিত হয়েছেন। —প্রতীকী ছবি।

উড়ানের সময় দেরিতে হলে অনেকেই বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বসে অপেক্ষা করেন। ঝাঁ-চকচকে লাউঞ্জ খুঁজতে গিয়েই গত কয়েক মাসে প্রতারিত হয়েছেন বহু যাত্রী। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক মহিলা তাঁর মোবাইল অ্যাপে এমন লাউঞ্জ বুক করতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন। শোনা গিয়েছে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিয়েছে প্রতারকেরা। দেশের বিভিন্ন শহরে গত জুলাই থেকে অগস্টের মধ্যে বহু মানুষই বিমানবন্দরে লাউঞ্জ বুক করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

কী ধরনের প্রতারণা চলছে?

বেঙ্গালুরুর ‘ক্লাউডসেক’ নামে এক সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, ‘লাউঞ্জ পাস’ নামে এক ভুয়ো অ্যাপ ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। হোয়াট্‌সঅ্যাপ ও অন্যান্য সমাজমাধ্যমে এই অ্যাপের লিঙ্কটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে গিয়ে তাড়াহুড়োয় অনেকেই এই অ্যাপটি ডাউনলোড করে লাউঞ্জ বুক করার চেষ্টা করছেন। আর অজান্তেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছেন। ক্লাউডসেকের সমীক্ষা বলছে, জুলাই থেকে অগস্টের মধ্যে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। তবে সমস্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেই মনে করছে ওই সংস্থা।

ক্লাউডসেকের তরফে জানানো হয়েছে, বিমানবন্দরে অনেক যাত্রীকেই সাহায্য করার নামে ‘লাউঞ্জ পাস’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে বলছে প্রতারকেরা। হোয়াট্‌সঅ্যাপে লিঙ্কও পাঠানো হচ্ছে। সেটি ডাউনলোড করলেই সেখানে বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে বলা হচ্ছে। হয় আঙুলের ছাপ, নয়তো মুখের ছবি দিয়ে স্ক্যান করে অ্যাপটি খুলতে হচ্ছে। তার পরেও লাউঞ্জে ভাল জায়গা দেওয়ার নামে যাত্রীদের আরও অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও জেনে নেওয়া হচ্ছে। আর সেই তথ্যকে কাজে লাগিয়েই যাত্রীর ফোনের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ ভাবে নিজেদের কব্জায় নিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা। ব্যস্ত বিমানবন্দরে ভিড় এড়িয়ে লাউঞ্জে ভাল জায়গা পাওয়ার লোভে অনেকেই এ ভাবে বিপদে পড়ছেন।

বেঙ্গালুরুর ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন, তিনিও একই ভাবে নিজের বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়েছিলেন। তার পর তাঁকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েও লাউঞ্জ না পাওয়ায় তিনি প্রতারকের দেওয়া ফোন নম্বরে ফোন করে দেখেন সেটির পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। তার পর দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে পর পর টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। কী করবেন বুঝতে না পেরে ওই মহিলা যখন পুলিশের কাছে যান, তত ক্ষণে তাঁর অ্যাকাউন্ট প্রায় ফাঁকা করে দিয়েছে প্রতারকেরা। শুধু তা-ই নয়, তিনি দেখেন, তাঁর ফোনটি অন্য কেউ চালনা করছে। সমস্ত টাকা ইউপিআইয়ের মাধ্যমে অন্য কোনও একটি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞেরা সাবধান করে বলেছেন, বিমানবন্দরে লাউঞ্জ পেতে কোনও রকম অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না। কখনওই অজানা কাউকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ও বায়োমেট্রিক তথ্য দেবেন না। বোর্ডিং পাস দেখিয়ে অনলাইনে যে ভাবে বুক করতে হয়, সে ভাবেই করুন। কোনও কারণে সন্দেহ হলে পুলিশ ও সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের সাহায্য নিন।

Advertisement
আরও পড়ুন