মৃগী সারাতে নতুন ধরনের অস্ত্রোপচার করলেন চিকিৎসকেরা।
১০ বছর ধরে মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিলেন তরুণ। কোনও চিকিৎসাতেই সারেনি। সেখানে অসাধ্যসাধন করেছেন ফরিদাবাদের চিকিৎসকেরা। আধুনিক অস্ত্রোপচারে তরুণের মস্তিষ্কে বসিয়ে দিয়েছেন বিশেষ এক যন্ত্র। তাতেই রোগ নির্মূল হয়েছে বলে দাবি।
ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারটি করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এমআরআই করেও মৃগীর কারণ ধরা পড়েনি। তার পরেই নতুন এক পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু হয় তরুণের। সেই পদ্ধতির নাম ‘স্টিরিয়ো-ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফি’ (এসইইজি)। এই পদ্ধতিতে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে ছোট্ট দু’টি ইলেকট্রোড বসিয়ে দেওয়া হয় মাথার ভিতরে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, যন্ত্রটি মস্তিষ্কের বসানোর পর ইলেকট্রোড দু’টি থেকে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত ঢুকতে শুরু করবে। ফলে মস্তিষ্কের যে স্নায়ুগুলি অকেজো হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করবে। এই ভাবে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।
আগে খিঁচুনি শুরু হলে থামতেই চাইত না। মাটিতে শুয়ে ছটফট করতেন তরুণ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যন্ত্রটি বসানোর পরে খিঁচুনি কমে গিয়েছে তাঁর। রোগও নির্মূল হতে শুরু করেছে।
মৃগী হল স্নায়ুঘটিত রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জিনগত কারণে এই সমস্যা দেখা যায়। তবে মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত থেকেও মৃগী হতে দেখা গিয়েছে অনেকের। সদ্যোজাত থেকে শুরু করে বয়স্কদেরও এই রোগ হতে পারে। তবে কারণটা ভিন্ন। মস্তিষ্কের স্নায়ু কিংবা গঠনগত কোনও সমস্যা থাকলেও কিন্তু এই রোগ হানা দিতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কে অসংখ্য সূক্ষ্ম স্নায়ুর ‘সার্কিট’ থাকে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। সেই স্নায়ুর সার্কিটে অতিরিক্ত ‘স্পার্কিং’-এর কারণেই মৃগী রোগ দেখা দেয়। মৃগীর নানা ধরন আছে। উপসর্গও আলাদা। কারও খিঁচুনি বেশি হয়, কারও কম। রোগীর সমস্যাটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেটা বোঝার জন্য এমআরআই এবং ইসিজি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগের মাত্রা বুঝে রোগীকে ওষুধ খেতে হয়। এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সারা জীবন ওষুধ খেতে হচ্ছে, এমন উদাহরণও রয়েছে।সেই সঙ্গেই জীবনযাত্রায় অনেক বদল আনতে হয়, অনেক নিয়মও মেনে চলতে হয়। নতুন ধরনের অস্ত্রোপচারে রোগটি পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে বলেই আশা চিকিৎসকদের।