যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল চিত্র।
উপনির্বাচনে বাজিমাৎ করলেন যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশে ন’টি বিধানসভার উপনির্বাচনে দু’টি বাদে সব ক’টিতেই জিতলেন এনডিএ প্রার্থীরা। লোকসভা নির্বাচনে নিজের রাজ্যে খারাপ ফলের কারণে যোগীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সি নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। আজকের ফলাফলের পরে যোগী আরও শক্তিশালী হয়ে প্রত্যাবর্তন করলেন।
আজ যে ন’টি আসনের ফল প্রকাশিত হল, তার মধ্যে গত বিধানসভায় চারটিতে জিতেছিল সমাজবাদী পার্টি। আজ এসপি-র হাত থেকে সেই চারটির মধ্যে দু’টি আসন ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন যোগী। ওই জয়ের ফলে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করা এসপি নেতা অখিলেশ যাদবের ডানা অনেকাংশেই ছাঁটতে সক্ষম হলেন যোগী। যদিও এসপি নেতৃত্বের দাবি, প্রশাসনের মদতে জোর করে হারানো হয়েছে তাঁদের প্রার্থীদের।
আজ যে আসনগুলি বিজেপি জিতেছে, তার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হল কুন্ডরকি আসনে জয়লাভ। মুসলিমবহুল ওই আসনটি এ যাবৎ সমাজবাদী পার্টির দখলে ছিল। ওই আসনে এ বার বারো জন প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। যার মধ্যে বিজেপির প্রার্থী রামবীর সিংহ ছাড়া বাকি সকলেই ছিলেন মুসলিম। মুসলিমবহুল এলাকা হওয়া সত্ত্বেও সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগির সুযোগ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা এসপি প্রার্থীকে ১.৪৪ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হারান বিজেপি প্রার্থী। প্রায় ত্রিশ বছর পরে ওই কেন্দ্রে ফের জয়ের মুখ দেখল বিজেপি। মুসলিমবহুল এলাকায় ওই হার এসপি-র কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। বিজেপি দ্বিতীয় তাৎপর্যপূর্ণ জয় পেয়েছে কাটেহারি কেন্দ্রে। মূলত দলিত অধ্যুষিত ওই আসনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে ৩৫ হাজার ভোটে হারিয়ে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী ধর্মরাজ নিষাদ। বিজেপি শিবিরের মতে, লোকসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দলিত ভোট বিজেপির পিছন থেকে সরে গিয়েছিল। আজ ভোটের ফলে স্পষ্ট, ফের দলিত ভোট বিজেপির ঘরে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ফল থেকে স্পষ্ট, দলিত ভোটারদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে পাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আজকের ফলাফল এসপি নেতৃত্বের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে লোকসভায় উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করার পরে চলতি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফার প্রশ্নে অনমনীয় অবস্থান নেন অখিলেশ যাদব। এসপি শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব দেখে শেষ পর্যন্ত উপনির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। রাজনীতিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, আজকের ফলাফল স্পষ্ট করে দিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস ও এসপি-র একে অন্যকে প্রয়োজন। যদিও এসপি নেতৃত্বের যুক্তি, উপনির্বাচনে সাধারণত ক্ষমতাসীন দলই জেতে। তাই উপনির্বাচন দিয়ে বিরোধীদের শক্তি মাপা উচিত নয়। কংগ্রেসের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘ফল প্রকাশের আগে এই এসপি নেতৃত্ব ন’টি বিধানসভা উপনির্বাচনকে রাজ্যে ২০২৭ সালে হতে যাওয়া বিধানসভা ভোটের আগে সেমিফাইনাল বলে দাবি করেছিলেন!’’