—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে সিবিআই কী জানাবে? সিবিআই-ও কি কলকাতা পুলিশের মতোই বলবে মাত্র এক জনই খুন-ধর্ষণে জড়িত? না কি আরও কিছু নাম উঠে আসবে? কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে কি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলবে সিবিআই? সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট কি মুখবন্ধ খামেই বন্দি থাকবে? না কি তার কিছুটা প্রকাশ্যে আসবে?
এই সব প্রশ্ন নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা— শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশই যেন এই শুনানির দিকে চেয়ে রয়েছে। সকলের একটাই প্রশ্ন, সোমবার কখন শুনানি শুরু হবে? ইউটিউবে সরাসরি শুনানি দেখা যাবে তো? সুপ্রিম কোর্টের মামলার তালিকা অনুযায়ী সকাল সাড়ে দশটায় প্রধান বিচারপতির এজলাসে সবার প্রথমে আর জি কর মামলার শুনানিহওয়ার কথা।
সুপ্রিম কোর্টের এই শুনানির আগে রবিবার গোটা দেশের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি শহরে বিচার চেয়ে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। চিকিৎসক সংগঠনগুলি দেখতে চাইছে, সুপ্রিম কোর্ট কি সোমবার আর জি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি ও চিকিৎসক-তরুণীর মৃত্যুর যোগসূত্র নিয়ে সিবিআইয়ের সামনে প্রশ্ন তুলবে?
আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর পরে গোটা দেশে ডাক্তারদের ধর্মঘট শুরু হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা শুরু করেছিল। গত ২০ অগস্ট প্রথম দিনের শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা বাড়াতে জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ করার কথা বলেন তিনি। আর জি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ মোতায়েনেরও নির্দেশ দেন। গত সপ্তাহে সিআইএসএফ মোতায়েন নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি তুলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে নরেন্দ্র মোদী সরকার বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সংঘাত দেখা দিতে পারে।
সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের কাছে খুন-ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি এবং আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের কাছে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট চেয়েছিল। গত ২২ অগস্ট সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ তথা রাজ্য প্রশাসনকে এফআইআর দায়ের হওয়ায় দেরি ও সন্দীপ ঘোষকে অন্য হাসপাতালে বহাল করার উদ্যোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। দুই তদন্তকারী সংস্থাই আগামিকাল ফের তদন্তের অগ্রগতির কথা জানাবে।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর শুনানির কথা থাকলেও প্রধান বিচারপতির শারীরিক অসুস্থতার জন্য তা হয়নি। শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার কারণ নিয়ে নানা রকম জল্পনা ছড়িয়েছিল। তবে ৬ সেপ্টেম্বর বা গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতি বাড়ি থেকেই শুনানিতে যোগ দেন। সেদিন তাঁরই বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মামলা খারিজ করে দেয়। সন্দীপের দাবি ছিল, সিবিআই আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে করুক। কিন্তু তার সঙ্গে খুন-ধর্ষণের ঘটনার যোগাযোগ টানা চলবে না। প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, এই ‘যোগাযোগ’-টাই সিবিআই তদন্তের বিষয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত সম্পর্কে কোনও নির্দেশ দেয় কি না, সেটাও দেখতেচাইছেন আইনজীবীরা।