Atique-Ashraf Shot Dead

ভাই ভোটে হেরেছিলেন বলে ‘বিধায়ককে খুন করান আতিক’, কম যেতেন না গ্যাংস্টার আশরফও

বিধায়ক রাজু পাল খুনের মামলায় আসিফ-সহ বাকি সাত জনকে বেকসুর খালাস করেছিল আদালত। ওই বছরই ইলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হয়। জয়ী হন আশরফই।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
প্রয়াগরাজ শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১২:২৩
image of ashraf ahmed

অভিযোগ ছিল, ভাই আশরফের (ছবিতে) জন্যই নাকি রাজু পালকে খুন করেছিলেন আতিক। — ফাইল ছবি।

গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের সঙ্গেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন ভাই আসিফ আহমেদ। বরাবর আতিকের পাশে থেকেছেন। মৃত্যুতেও দাদার সঙ্গ ছাড়েননি আসিফ, ওরফে খলিদ আজিম। শনিবার প্রয়াগরাজে মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে গুলি লেগে খুন হন তিনিও। ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, ভাইকে কম ভালবাসতেন না আতিক। অভিযোগ ছিল, ভাইয়ের জন্যই নাকি রাজু পালকে খুন করেছিলেন আতিক, যে অপরাধের মামলা মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর পিছু ছাড়েনি।

২০০৪ সালে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন আতিক। সমাজবাদী পার্টির টিকিটে সে বার ভোটে জিতেছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের ওই আসন থেকে অতীতে ভোটে জিতেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও। আতিক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর ইলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র শূন্য হয়ে যায়। ২০০৫ সালে সেখানে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়। আতিকের জায়গায় ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ভাই আশরফ। কিন্তু বহুজন সমাজ পার্টি রাজু পালের কাছে হেরে যান আসিফ। মনোনয়ন পেশের সময় আসিফ যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকারও বেশি।

Advertisement

আতিকের কাছে ভোটে হার ছিল বড় ধাক্কা। ২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি খুন করা হয় রাজুকে। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রাজু। বাড়ির কাছেই খুন করা হয় তাঁকে। সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী। অভিযোগ, খুনের নেপথ্যে ছিলেন আতিক এবং ভাই আসিফ। আতিক, আসিফ এবং সাত জন অপরিচিতের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন রাজুর স্ত্রী পূজা পাল। যদিও রাজু খুনের মামলায় আসিফ-সহ বাকি সাত জনকে বেকসুর খালাস করেছিল আদালত। ওই বছরই ইলাহাবাদ পশ্চিম কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হয়। জয়ী হন আশরফই।

রাজু খুনের আগে আতিকের নামে অনেক মামলা ছিল। রাজু খুনের মামলাতেই প্রথম বার দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। রাজনৈতিক চাপে পড়ে ২০০৮ সালে আত্মসমর্পণ করেন আতিক। পুলিশের একাংশ মনে করে, বিধানসভা উপনির্বাচনে ভাই আসিফের হার মেনে নিতে পারেননি আতিক। সে কারণেই রাজুকে খুন করেছিলেন।

রাজু পাল খুনের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন আইনজীবী উমেশ পাল। সেই উমেশও খুন হন। উমেশের স্ত্রী জয়ার দাবি, তাঁর স্বামীকে খুন করেছেন আতিক এবং আসিফ। তাঁর আরও দাবি, ২০০৬ সালে উমেশকে অপহরণ করে নিজেদের পক্ষে সাক্ষী দিতে বাধ্য করেছিলেন আতিক এবং আসিফ। আইনজীবী উমেশকে খুনের অভিযোগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রয়াগরাজ থেকে গ্রেফতার হন আশরফ। সঙ্গে কিছু বেআইনি অস্ত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। সেই থেকে বরেলী জেলে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি, সেই বরেলী জেলে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল আশরফের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জেলে সহযোগীদের সঙ্গে দেখা করতেন আশরফ। এমনকি তাঁকে জেলের বাইরে থেকে বিভিন্ন জিনিসও সরবরাহ করা হত। এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেন বরেলী জেল কর্তৃপক্ষ। তল্লাশি চালানো হয় আশরফের শালা সাদ্দামের বাড়িতে।

গত মার্চে এই আশরফের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাই কোর্ট। বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর অপরাধী, গ্যাংস্টার, বাহুবলী আতিক আহমেদের প্রকৃত ভাই হলেন আশরফ। অন্তত ১০০টি অপরাধের ঘটনায় তিনি জড়িত রয়েছেন। আবেদনকারী অভিযুক্ত ভয়ঙ্কর অপরাধী এবং বাহুবলীর শুধু ভাই নন, তিনি নিজেও এক জন অপরাধী এবং গ্যাংস্টার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement