সুড়ঙ্গ থেকে উঁকি মারছেন শ্রমিক। ছবি: এক্স।
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার সকালে। কী ভাবে সুড়ঙ্গের ভিতর ৪১ জন শ্রমিক দাঁড়িয়ে আছেন, কী করছেন, সব দেখা গিয়েছে উদ্ধারকারী দলের ক্যামরায়। একটি পাইপের মাধ্যমে ওই ক্যামেরা শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ভিডিয়োর শুরুতেই সুড়ঙ্গ-মুখ দিয়ে কয়েক জন শ্রমিককে উঁকি মারতে দেখা গিয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী মঙ্গলবার সকালে একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। সেখানে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে শ্রমিকদের কথোপকথন শোনা গিয়েছে। একটি ছ’ইঞ্চি চওড়া পাইপ সুড়ঙ্গে ঢোকানো গিয়েছে। তার মাধ্যমেই ক্যামেরা পাঠিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সুড়ঙ্গ থেকে উঁকি মেরে পাইপটি দেখছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের উপর থেকে চেঁচিয়ে বলা হচ্ছে ক্যামেরা পাঠানোর কথা। কী ভাবে সেই ক্যামেরা ব্যবহার করবেন, তা-ও চেঁচিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। শ্রমিকদের প্রথমে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, ‘‘সকলে ঠিক আছেন?’’ শ্রমিকেরা ইতিবাচক উত্তরে দিলে তাঁদের বলা হয়েছে, ‘‘ক্যামেরায় নিজেদের দেখান। ক্যামেরাটি পাইপ থেকে হাত বাড়িয়ে তুলে নিন এবং সুড়ঙ্গের ভিতরে নিয়ে যান। বাকিদের সকলকে দেখান। আমরা আপনাদের দেখতে পাচ্ছি। আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। সবাইকে সুস্থ ভাবে বাইরে বার করে আনা হবে।’’
এর পরেই দেখা যায়, যাঁরা উঁকি মারছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে এক জন পাইপে হাত ঢুকিয়ে ক্যামেরা তুলে নিচ্ছেন। তার পর সুড়ঙ্গের ভিতরে কী চলছে, সব দেখা গিয়েছে। যাঁরা সুড়ঙ্গে আছেন, প্রত্যেককে ক্যামেরার মাধ্যমে দেখাতে বলেন উদ্ধারকারীরা। ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে সুড়ঙ্গের ভিতরের সম্পূর্ণ দৃশ্য।
গত ১০ দিন ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু এখনও তেমন কিছু করা যায়নি। যত সময় এগোচ্ছে, উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে। পাইপের মাধ্যমে উদ্ধারকারীরা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। পরিজনদের সঙ্গেও সে ভাবেই কথা বলছেন শ্রমিকেরা। পাইপ দিয়ে সোমবার শ্রমিকদের কাছে খিচুড়ি, ডালিয়া এবং নানা রকম ফল পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে।
উদ্ধারকারীরা পাইপের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপিক ফ্লেক্সি ক্যামেরা সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠিয়েছিলেন। তাতেই আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ভিডিয়োটি ধরা পড়েছে। সোমবার নতুন পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠানো হয়েছে একটি মোবাইল ফোন এবং চার্জার। সুড়ঙ্গের অন্তত ৬০ মিটার গভীরে শ্রমিকেরা আটকে আছেন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৪ মিটার খোঁড়া গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে উদ্ধারকাজের অগ্রগতির খবর নিচ্ছেন। ফোন করেছেন মঙ্গলবারও। উপর দিক থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। জায়গা চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারই নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দেওয়া হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে।