Hathras Stampede Incident

ভোলে বাবার সঙ্গে যোগ ছিল রাজনৈতিক দলের, টাকাও আসত! সঙ্গীকে জেরা করে দাবি পুলিশের

হাথরসে পদপিষ্টের ঘটনায় শনিবারই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন মূল অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর। এই মধুকরই ভোলে বাবার ঘনিষ্ঠ। হাথরসে ‘সৎসঙ্গে’র আয়োজনের মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনিই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫৬
Uttar Pradesh police probe political links of Bhole Baba

(বাঁ দিকে) ভোলে বাবা। হাথরসের দুর্ঘটনা (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্টের ঘটনা এখনও টাটকা। এই ঘটনায় ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিজনের চোখের জল শুকোয়নি। তাঁদের মূলত দুই দাবি। এক, তদন্তভার কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দেওয়া হোক। দুই, ভোলে বাবা ওরফে সূরজ পালের শাস্তি। এই আবহে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে। তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে যে, ভোলে বাবার সংগঠন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে টাকা পায়। অন্য দিকে, ‘সৎসঙ্গে’ পদপিষ্টের ঘটনায় ভোলে বাবার নামে প্রথম এফআইআর দায়ের হল।

Advertisement

হাথরসে পদপিষ্টের ঘটনায় শনিবারই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন মূল অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর। এই মধুকরই স্বঘোষিত ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার হরি ওরফে ভোলে বাবার ঘনিষ্ঠ। হাথরসে ‘সৎসঙ্গে’র আয়োজনের মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনিই। হাথরসের পুলিশ সুপার নিপুণ আগরওয়াল জানান, তাঁরা বিগত কয়েক দিন মধুকরের গতিবিধি পর্যালোচনা করেছেন। সেখান থেকেই জানতে পেরেছেন, মধুকর কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ভোলে বাবার সংগঠন দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলি পরিচালনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।

হাথরসের পুলিশ সুপার আরও জানান, গত কয়েক মাসে মধুকরের নামে যে সব আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিংবা তাঁর কল রেকর্ডিং সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মধুকরকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনও জানানো হয় আদালতে। তবে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

কী ভাবে হাথরসের ‘সৎসঙ্গে’ দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিস্তর কাঁটাছেঁড়া চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে উঠে আসছে নানা তথ্য। ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআরে দাবি করা হয়েছে, মঙ্গলবার ‘সৎসঙ্গে’ ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল পুলিশের তরফে। কিন্তু সেখানে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের কথায়, ‘‘অনুষ্ঠান শেষে ভোলে বাবার কাছে যাওয়ার জন্য ভক্তেরা ‘মারামারি’ শুরু করে দেন। কে আগে তাঁর কাছে পৌঁছবেন, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি চলে। কিন্তু, ভোলে বাবার সহযোগীরা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। সরিয়ে দেন ভিড়। যার ফলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ে।’’ অনেকেই এই দুর্ঘটনার জন্য পুলিশের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন। তাঁদের মতে, এত বড় সমাবেশের নিরাপত্তায় ছিলেন মাত্র ৪০ জন পুলিশকর্মী। ভিড় সামাল দিতে ব্যর্থ তাঁরা।

এই ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআরে সর্বপ্রথম নামটা ছিল মধুকরের। মঙ্গলবারের ‘সৎসঙ্গে’র আয়োজন করেছিলেন তিনিই। তাঁর কাঁধেই ছিল যাবতীয় দায়িত্ব। কিন্তু ঘটনার পর পরই গা-ঢাকা দেন তিনি। তাঁর খোঁজে এক লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কিন্তু মধুকরের নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে পুলিশের সন্দেহ ছিল, এই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত পার্শ্ববর্তী কোনও রাজ্যে আত্মগোপন করে রয়েছেন। ফলে দিল্লি, হরিয়ানা এবং রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শনিবার দিল্লির নজফগড় থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন মধুকর। তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, মধুকরের চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন দিল্লি পুলিশের কাছে। পরে তাঁকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement