দিল্লিতে বিক্ষোভ কুকি মহিলাদের। — ফাইল চিত্র।
মণিপুরে গোষ্ঠীহিংসার জেরে আবার বিক্ষোভ রাজধানী দিল্লিতে। এ বার জনজাতি কুকি-জ়ো গোষ্ঠীর মহিলারা মণিপুরের পাহাড়ি এলাকার জেলাগুলির জন্য জন্য ‘পৃথক প্রশাসনের দাবিতে পথে নামলেন। শুক্রবার যন্তর মন্তরের ওই বিক্ষোভ সমাবেশে জনজাতি মহিলা সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার গোষ্ঠীহিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে ত্রাণসামগ্রী পাঠাচ্ছে, তা জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় ঠিক ভাবে বণ্টন করছে না মেইতেই প্রভাবিত মণিপুর সরকার। তাই নিরপেক্ষ ভাবে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ তদারকির জন্য জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলির জন্য পৃথক প্রশাসন প্রয়োজন।
মেইতেই-গরিষ্ঠ মণিপুরে তাঁদের সুরক্ষা দিতে পারবে না বলে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন সে রাজ্যের কুকি বিধায়কেরা। তাই কুকি-জ়ো জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক মুখ্যসচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশক (ডিজি) নিয়োগের দাবি জানান তাঁরা। মণিপুরের ১০ জন কুকি-জ়ো বিধায়ক ওই চিঠিতে সই করেছেন। তাঁদের মধ্যে সাত জনই শাসকদল বিজেপির। চিঠিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কার্যকলাপের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন তাঁরা।
এই ঘটনার জেরে পদ্মশিবিরের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের চিন্তা বাড়িয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন(আইএম)। মণিপুরের উখরুল, সেনাপতির মতো জেলাগুলিতে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীর তরফে সে রাজ্যের নাগা বিধায়কদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে। সম্প্রতি, সে রাজ্যের ৩২ জন মেইতেই বিধায়কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন ৮ জন নাগা বিধায়ক। চিঠিতে দাবি করা হয়েছিল, কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি ভেঙে দেওয়ার।
এর পাশাপাশি, কুকি অধ্যুষিত পাঁচ জেলার পৃথক প্রশাসনের দাবিরও বিরোধিতা করা হয়েছিল ওই চিঠিতে। কেন্দ্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে থাকা নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম) জানিয়েছে, ওই চিঠির সঙ্গে নাগা আমজনতার স্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই ওই চিঠিতে সই করা উচিত হয়নি নাগা বিধায়কদের। বুধবার কুকি বিধায়কেরা ওই পাঁচ জেলায় তাঁদের জনজাতিভুক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। শুক্রবার জনজাতি মহিলা সংগঠনও মণিপুর পুলিশের কমান্ডো বাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তুলেছে।