TMC

দুই সঙ্গী নিয়ে সেবি-তে যাবে তৃণমূল, ‘ব্রাত্য’ সেই কংগ্রেস

লোকসভা ভোটের বুথ-ফেরত সমীক্ষা ও ফল প্রকাশের সময়ের শেয়ার বাজারের ওঠানামার তদন্তের দাবি জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আগেই সেবি-র কাছে চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:৪২
tmc

—প্রতীকী ছবি।

কংগ্রেস বাদ। সঙ্গে থাকবেন শুধু শরদ পওয়ার ও উদ্ধব ঠাকরের দলের সাংসদেরা।

Advertisement

লোকসভা ভোটের বুথ-ফেরত সমীক্ষা ও ফল প্রকাশের সময়ের শেয়ার বাজারের ওঠানামার তদন্তের দাবি জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আগেই সেবি-র কাছে চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিল। এ বার তৃণমূলের চার সাংসদের একটি প্রতিনিধিদল মুম্বইয়ে গিয়ে শেয়ার বাজারের ওই নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এ জন্য সেবি-র চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচকে চিঠি লিখে ১৮ জুন, মঙ্গলবার সময় চেয়েছেন। তৃণমূলের সাংসদদের সঙ্গে যাতে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি-র সাংসদেরাও যোগ দেন, তা নিয়ে তৃণমূল ওই দুই দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছে। দুই দলের এক জন করে সাংসদ যাবেন বলে ঠিকও হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব এ বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও কথাই বলেননি।

মহারাষ্ট্র থেকে লোকসভায় কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যাই সবথেকে বেশি। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, শরদ পওয়ারের এনসিপি এবং উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা জোট বেঁধেই লোকসভা ভোটে লড়েছিল। আজই তিন দলের নেতারা মুম্বইয়ে ঘোষণা করেছেন, চলতি বছরের শেষে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা জোট বেঁধেই লড়বেন। রাহুল গান্ধীও বুথ ফেরত সমীক্ষা এবং লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের সময়ে শেয়ার বাজারে উত্থান-পতনের তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি করেছে। কিন্তু তৃণমূল এ বিষয়ে কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই সেবি-র কাছে তদন্তের দাবি জানাতে যেতে চাইছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্বের কংগ্রেসের প্রতি ‘অ্যালার্জি’ এবং আঞ্চলিক দলগুলিকে এককাট্টা করে ‘জিঞ্জার গোষ্ঠী’ তৈরি করার প্রবণতাই ফের প্রকট হয়ে উঠছে। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাসভবনে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির ছিলেন। একই সঙ্গে অভিষেক দিল্লি ও মুম্বইয়ে গিয়ে আলাদা ভাবে অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। সেখানেও ‘জোটের মধ্যে জোট’ তৈরির চেষ্টা ফুটে উঠেছিল।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীকে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তার জবাব না আসায় কংগ্রেসের প্রতি তৃণমূলের ‘অ্যালার্জি’ বেড়েছে। যদিও কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের বিবৃতিতে (পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের আসন কমে যাওয়া সত্ত্বেও) তৃণমূলের আসন বৃদ্ধিকে ‘ইন্ডিয়া’-র শক্তি বৃদ্ধি হিসেবেই তুলে ধরে সাধুবাদ জানানো হয়েছিল।

কেন সেবি-র কাছে দরবার করার সময় কংগ্রেসকে ডাকা হচ্ছে না? তৃণমূল সূত্রের দাবি, মহারাষ্ট্রে ‘ইন্ডিয়া’র দুই প্রধান দল উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও শরদ পওয়ারের এনসিপি। তৃণমূল তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলে থাকবেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাগরিকা ঘোষ, প্রতিমা মণ্ডল ও সাকেত গোখলে।

ভোটের ফল প্রকাশের আগে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা বলেছিলেন, ৪ জুনের পরে শেয়ার বাজার তুঙ্গে উঠবে। বুথ-ফেরত সমীক্ষা মোদী সরকারের বিপুল আসনে জিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়ার পরে শেয়ার বাজার তুঙ্গে উঠেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলে সেই সমীক্ষা না মেলায় শেয়ার বাজারের পতন হয়। লগ্নিকারীদের ৩১ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভুয়ো বুথ-ফেরত সমীক্ষা দেখিয়ে শেয়ার বাজার চড়ায় তুলে অনেকে লাভবান হয়েছে। ডেরেক তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, এনডিএ-র শরিক দলের নেতাদের আত্মীয়েরা এই সুযোগে মুনাফা কুড়িয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement