Chandrababu-Nitish

একটি করে পূর্ণমন্ত্রী, তিনটি ‘কম গুরুত্বের মন্ত্রক’, দুই শরিককে বশে আনতে আর কী কৌশল নিলেন মোদী

নরেন্দ্র মোদী বিজেপির হাতে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক রেখে দিয়েছেন। জেডিএস, লোক জনশক্তি পার্টি, আরএলডি-র মতো অন্য শরিকদের ভাগ্যেও ছোট মন্ত্রকই জুটেছে।

Advertisement
প্রেমাংশু চৌধুরী ও অগ্নি রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ০৭:৫৯
(বাঁ দিক থেকে) চন্দ্রবাবু নায়ডু, নরেন্দ্র মোদী এবং নীতীশ কুমার।

(বাঁ দিক থেকে) চন্দ্রবাবু নায়ডু, নরেন্দ্র মোদী এবং নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।

চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টিকে স্পিকারের পদ বা কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের বদলে অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস। নীতীশ কুমারকে স্পিকারের পদ বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের বদলে ২০২৫-এ বিজেপি-জেডিইউ জোট ক্ষমতায় এলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদির প্রতিশ্রুতি। মূলত এই কৌশলেই এনডিএ সরকারের দুই প্রধান শরিক তেলুগু দেশম পার্টি ও জেডিইউ-কে একটি করে পূর্ণমন্ত্রীর পদ ও তিনটি ‘কম গুরুত্বের’ মন্ত্রক দিয়ে সন্তুষ্ট রেখেছে বিজেপি।

Advertisement

তেলুগু দেশম সূত্রের বক্তব্য, চন্দ্রবাবু এনডিএ জোট ছেড়ে এখনই ইন্ডিয়া মঞ্চে যোগ দিতে চান না। কারণ ইন্ডিয়া মঞ্চ কত দিন অটুট থাকবে, তা নিয়ে তাঁর মনে সংশয় রয়েছে। তা ছাড়া অন্ধ্রের বিধানসভা ভোটে তেলুগু দেশম, বিজেপি, জনসেনা পার্টি জোট বেঁধে লড়েছিল। এখন জোট ভাঙলে চন্দ্রবাবুর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তার বদলে তিনি অন্ধ্রে তেলুগু দেশমের শক্তি বাড়িয়ে পুত্র নরা লোকেশের হাতে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তুলে দিতে চাইছেন। তেলুগু দেশম থেকে রামমোহন নায়ডুকে বিমান মন্ত্রক ছেড়েছে বিজেপি। আজ বিমানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে রামমোহন বলেছেন, তেলুগু দেশম এতে অখুশি বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। বিমান মন্ত্রকে যথেষ্ট কাজের সুযোগ রয়েছে।

মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় জেডিইউ-এর ভাগ্যে শুধু পঞ্চায়েতি রাজ ও মৎস্য-পশুপালন-ডেয়ারি মন্ত্রক জুটেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, ২০২৫-এ বিহারের বিধানসভা ভোটের আগে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হবে বলে বিজেপির সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে জেডিইউ বিহারে বিজেপির মতোই ১২টি আসন জিতেছে। তাতে প্রমাণ হয়েছে, বারবার ডিগবাজি খেলেও নীতীশের জনপ্রিয়তা কমেনি। তাঁর কুড়মি ভোটব্যাঙ্ক ধাক্কা খায়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের আগে তো নয়ই, ভোটের পরেও বিজেপি-জেডিইউ জোট ক্ষমতায় এলে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দিতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে বিজেপি। জেডিইউ সূত্রের খবর, নীতীশও কেন্দ্রে মন্ত্রিত্বের বদলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ এবং উপরি পাওনা হিসেবে বিহারের জন্য আর্থিক প্যাকেজে বেশি আগ্রহী।

মহারাষ্ট্রের দুই শরিককে নিয়ে অবশ্য এখনও সামান্য সমস্যা রয়েছে। অজিত পওয়ারের এনসিপি পূর্ণমন্ত্রীর পদ না পাওয়ায় মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়নি। তাঁদের ভবিষ্যতে মন্ত্রিসভায় নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দের দলের একজন প্রতিমন্ত্রী হলেও তাঁরা পূর্ণমন্ত্রীর পদ চাইছেন। আজ মুম্বইয়ে শিবসেনার বৈঠকে শিন্দের পুত্র শ্রীকান্ত শিন্দে-সহ দলের নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিরোধীরা মানুষকে বোঝাতে পেরেছে যে, বিজেপি নিজের শরিকদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক ছাড়েনি। উদ্ধব গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জয় রাউত দাবি করেছেন, শিন্দে এবং অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর অনেক সাংসদ-বিধায়কই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তা সত্ত্বেও শিন্দে নিজে এখনই বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার কথা ভাবতে পারছেন না। কারণ চলতি বছরেরশেষেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। মানুষের সহানুভূতি যে তাঁর বদলে উদ্ধব ঠাকরের দিকে, তা লোকসভা ভোটে প্রমাণ হয়েছে। ফলে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত শিন্দে বা অজিত পওয়ার, কারও পক্ষেই বেশি ঝুঁকি নেওয়া মুশকিল।

আরও পড়ুন
Advertisement