Education System

পরিকাঠামো থেকে মান, তোপে দিল্লির শিক্ষার হাল

বিজেপির দাবি, সামগ্রিক ভাবে দিল্লির সরকারের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, গত আর্থিক বছরে শিক্ষা খাতে কেন্দ্রীয় অনুদানের অর্ধেক অর্থই খরচ করতে পারেনি আপ সরকার।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৪
দিল্লিতে শিক্ষার মান ও পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

দিল্লিতে শিক্ষার মান ও পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। —প্রতীকী চিত্র।

স্বাস্থ্যের পরে দিল্লির শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়েও সরব হলেন বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, সামগ্রিক ভাবে দিল্লির সরকারের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, গত আর্থিক বছরে শিক্ষা খাতে কেন্দ্রীয় অনুদানের অর্ধেক অর্থই খরচ করতে পারেনি আপ সরকার।

Advertisement

ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে আমূল বদলের লক্ষ্যে একাধিক প্রকল্প হাতে নেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে পাল্টে দেওয়ার প্রশ্নে কেজরীওয়াল যে উদ্যোগ নেন, সেই মডেল নিজেদের রাজ্যে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে পাল্লা দিতে ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধম্যে শিক্ষাপ্রদান শুরু করেছিল দিল্লির স্কুলগুলি। কিন্তু দশ বছরের মাথায় আপের শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি হাই কোর্টও। গত এপ্রিলে শিক্ষা দফতর সংক্রান্ত একটি মামলায় দিল্লি হাই কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, দিল্লির সরকারি স্কুলগুলি বুনিয়াদি পরিকাঠামোর অভাবে ভুগছে। পড়ুয়াদের পড়ার বই, বসার আসবাবপত্র জোগাতেও ব্যর্থ হয়েছে তারা। নেই পর্যাপ্ত শৌচাগার, খেলার মাঠ, খাওয়ার জায়গাও।

ঘরোয়া ভাবে আপ নেতারাও মানছেন, মণীশ সিসোদিয়া জেলে যাওয়ার পর থেকেই শিক্ষাব্যবস্থায় ধস নামে। মণীশের পরিবর্তে শিক্ষামন্ত্রীর পদে এমন কাউকে বসানো উচিত ছিল, যিনি শক্ত হাতে হাল ধরতে পারেন। কিন্তু দায়িত্ব যায় মুখ্যমন্ত্রী অতিশীর হাতে। মুখ্যমন্ত্রিত্বের সঙ্গে শিক্ষা দফতর সামলাতে গিয়ে কার্যত অবহেলিত হয় শিক্ষাব্যবস্থা। বিজেপির দাবি, পরিস্থিতি এমন হয়েছে, গত অর্থ বর্ষে বারদ্দ অর্থের অর্ধেক খরচ করতে পারেনি সরকার। প্রভাব পড়েছে পডু়য়াদের উপরেও। তথ্যের অধিকার আইনে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, দিল্লিতে যে ১,০৫০টি সরকারি স্কুল রয়েছে, সেগুলির প্রায় এক লক্ষ পড়ুয়া নবম শ্রেণির গণ্ডি পার হতে ব্যর্থ হয়েছে। অষ্টম শ্রেণিতে ফেল করেছে ৪৬ হাজার পড়ুয়া। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০-২১ সালে একাদশ শ্রেণিতে ফেল করেছিল ৭,২৪৬জন। ২০২২-২৩ সালে সেই সংখ্যাটি বেড়ে হয় ৫৪,৭৫৫, আর গত শিক্ষাবর্ষে (২৩-২৪) সালে একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে যেতে ব্যর্থ হয় ৫১,৯১৪ জন।

ফলে এক সময়ে আমজনতার সরকারি স্কুলে ভর্তি করার যে প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তাতে ফের ঘাটতি দেখা গিয়েছে। বিজেপির দিল্লি প্রদেশ সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব বলেন, ‘‘রিপোর্ট বলছে, স্কুল প্রতি পড়ুয়া ভর্তি কমেছে দিল্লিতে। ২০২২-২৩ সালে স্কুলপ্রতি গড়ে ৮৪৩ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। কিন্তু গত বছর সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮২০-তে। স্কুলছুটও বাড়ছে। শিক্ষকও কমেছে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে এই সরকার।’’ পাল্টা যুক্তিতে আপ নেতৃত্ব বলছেন, কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি দলের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। দিল্লির শিক্ষামডেল আজও অনুকরণীয়। বিরোধীরা যে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কথা বলছেন, তা ভিত্তিহীন।

Advertisement
আরও পড়ুন