(বাঁ দিকে) অল্লু অর্জুন, রেবন্ত রেড্ডি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পদপিষ্ট হয়ে মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় হায়দরাবাদ পুলিশ শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করেছিল দক্ষিণী অভিনেতা অল্লু অর্জুনকে। তার পরেই তেলঙ্গানার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সমালোচনা শুরু হয়েছিল বিভিন্ন মহল থেকে। যাতে খানিকটা ধুয়ো দিয়েছিল বিজেপি এবং আরএসএস-ও। কিন্তু সে সব সমালোচনাকে কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে রেবন্ত বলেছেন, ‘‘পুলিশ রাজধর্ম পালন করেছে।’’ পাশাপাশিই সমালোচকদের একাংশকে পাল্টা বিঁধে রেবন্ত বলেছেন, ‘‘আজকে যদি অল্লুকে গ্রেফতার না করা হত, তা হলে অনেকে বলতেন অভিনেতা বলে পুলিশ ছাড় দিল। সাধারণ মানুষ হলে জেলে ঢুকিয়ে দিত। সুতরাং পুলিশ আইন মেনেই যা করার করেছে। আইন আইনের পথেই চলবে। এখানে কেউ নাক গলাতে পারবেন না।’’
রেবন্তের বিরুদ্ধে এ-ও অভিযোগ উঠেছে, তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই অল্লুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করিয়েছেন পুলিশকে দিয়ে। এই অভিযোগের নেপথ্যে রয়েছে কয়েক দিন আগের একটি অনুষ্ঠান। যেখানে এক মঞ্চে ছিলেন অল্লু এবং রেবন্ত। ওই মঞ্চে রেবন্তকে পাত্তা না দিয়ে অল্লু ‘অসম্মান’ করেছিলেন বলে সমাজমাধ্যমে লেখালেখি শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থকেরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই তত্ত্বও উড়িয়ে দিয়েছেন রেবন্ত। তাঁর কথায়, ‘‘অল্লু যখন স্কুলের ছাত্র, তখন থেকে ওঁকে আমি চিনি। ওঁদের গোটা পরিবার কংগ্রেস করে। ওঁর কাকা চিরঞ্জীবী এখনও কংগ্রেসেই রয়েছেন। ওঁর শ্বশুরমশাই চন্দ্রশেখর রেড্ডি আমার আত্মীয় হন। আমাদের কোনও বিরোধ নেই। আমার সরকার শুধু রাজধর্ম পালন করেছে।’’
সাধারণত দেখা যায়, চলচ্চিত্র জগতের বড় তারকা হলে, অনেক প্রশাসনই তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে না। তারকাদের সঙ্গে থাকা জনপ্রিয়তাই তার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। কিন্তু রেবন্ত বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁর সরকার সে সবের ধার ধারবে না। রেবন্ত উল্লেখ করেছেন, ‘‘আইন সবার জন্য সমান।’’
গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর পুত্র এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করেছিল হায়দরাবাদ পুলিশ। অল্লুকে শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। অল্লু-সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। শুক্রবার অভিনেতার পাশাপাশি আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সন্ধ্যা থিয়েটারের মালিকও।
গ্রেফতারের পরে অল্লুকে নিম্ন আদালতে পেশ করে পুলিশ। বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিনেতা। তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছে তেলঙ্গানা হাই কোর্ট। ৫০ হাজার টাকার বন্ডে তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।