তিস্তা শেতলবাড়। ফাইল চিত্র ।
গোধরা পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গার মামলায় গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যাতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ড পান, সেই চেষ্টা করেছিলেন সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাড়-সহ দুই আধিকারিক। আদালতে এমন তথ্যই জমা দিলেন বিশেষ তদন্ত দল (সিট)-এর আধিকারিকরা। সিটের দাবি, ২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গার পর থেকে মোদীকে শাস্তি দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিস্তা। তিস্তা গুজরাত সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করেছিলেন বলেও বিশেষ তদন্ত দলের জমা দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেতলবাড়, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি আরবি শ্রীকুমার এবং প্রাক্তন আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্টের বিরুদ্ধে আমদাবাদ মেট্রো আদালতে ১০০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, শেতলবাড় এবং প্রাক্তন দুই পুলিশকর্তা গোধরা-পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গার অনেক প্রমাণ জালিয়াতি করে অন্য ভাবে পেশ করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা প্রয়োজনীয় প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ।
সিট-এর জমা দেওয়া চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা মোদীর মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতেই এই ষড়যন্ত্র করেছিলেন। সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও তিস্তাকে নথি জাল করতে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে শ্রীকুমার এবং সঞ্জীবের বিরুদ্ধে।
মোদীর রাজনৈতিক জীবন এবং সুনাম নষ্ট করার জন্যই অভিযুক্তরা এই ফাঁদ পাতেন বলেও সিটের জমা দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। জানানো হয়েছে, মোদীর বিরুদ্ধে জাল নথি ও হলফনামা তৈরির জন্য আইনজীবীদের একটি দলকে কাজে লাগানো হয়েছিল।
তিস্তাদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, গোধরায় গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে ক্ষতির মুখে পড়া মানুষদের জোর করে মিথ্যা বয়ানে স্বাক্ষর করানো হয়েছিল। কিন্তু যে হেতু এই বয়ান ইংরেজিতে ছিল, সেই কারণে ভুক্তভোগীরা, কী লেখা হয়েছে তা না বুঝেই তাতে স্বাক্ষর করেন। যে প্রত্যক্ষদর্শীরা তিস্তাকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেন, তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও চার্জশিটে অভিযোগ।
চার্জশিটে এ-ও উল্লেখ রয়েছে, অভিযুক্তরা গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর গুজরাতের বাইরে গিয়েছিলেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান সংগ্রহ করেছিলেন। আদালতে সিট জানিয়েছে, তিস্তা এবং ওই পুলিশ কর্তারা ছাড়াও কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন নেতা এই ষড়যন্ত্রে সামিল ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গোধরা-কাণ্ড পরবর্তী সময়ে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তিস্তাকে। গ্রেফতারের প্রায় আড়াই মাস পর তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে তিস্তাকে গুজরাত পুলিশের তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।