মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হোক! এমনই আবেদন জানিয়ে দিল্লির এক আদালতের দ্বারস্থ হলেন ২৬/১১ মুম্বই হামলার ‘মূল চক্রী’ তাহাউর রানা। চলতি মাসের প্রথমের দিকে পাকিস্তান বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী রানাকে আমেরিকা থেকে ভারতে নিয়ে এসেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে রানার ঠিকানা দিল্লির এনআইএ-র সদর দফতরের গারদের ছোট্ট কুঠুরি!
রানার আবেদনের ভিত্তিতে দিল্লি আদালতের বিচারক এনআইএ-র কাছে তাদের অবস্থান জানতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছেন। উল্লেখ্য, ভারতে প্রত্যর্পণের পর আদালত রানাকে ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। আগামী ২৩ এপ্রিল এই মামলার শুনানি হবে।
এনআইএ হেফাজতে প্রতি দিনই দফায় দফায় রানাকে জেরা করছেন তদন্তকারীরা। ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারিতে এনআইএ হেফাজতে দিন কাটছে তাঁর। সেখানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁকে জেরা করছেন তদন্তকারীরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা জেরা করা হচ্ছে রানাকে। সূত্রের খবর, হেফাজতে থাকাকালীন তিনি তিনটে জিনিস চেয়েছিলেন তদন্তকারীদের কাছে। তার মধ্যে রয়েছে কাগজ, কলম এবং কোরান। জেরাপর্বের সময়টুকু ছাড়া বাকি সময় লেখালিখি করছেন। দিনে পাঁচ বার নমাজপাঠ করছেন রানা। তাঁকে পাহারা দেওয়ার জন্য দু’জন নিরাপত্তাকর্মীকে সর্ব ক্ষণের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অন্তর তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও করা হচ্ছে। রানাকে নিরামিষ খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, হেফাজতে বিশেষ খাবারের জন্য আবেদন করেননি রানা। অন্য অভিযুক্তদের যা খেতে দেওয়া হয়, সেই খাবারই দেওয়া হচ্ছে রানাকে। তা-ই খাচ্ছেন। পর্যাপ্ত ঘুমাচ্ছেনও। তবে তিনি যাতে নিজের কোনও ক্ষতি করতে না পারেন বা আত্মহত্যার চেষ্টা না করতে পারেন, সেই দিকে কড়া নজর রাখা হয়েছে।
আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও পেয়েছেন রানা। তবে পরিবারের কারও সঙ্গেই দেখা করার অনুমতি নেই তাঁর। সেই অনুমতি চেয়েই আদালতের দ্বারস্থ হলেন রানা। উল্লেখ্য, তদন্তকারীরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদপর্বে মূলত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছেন। মুম্বই হামলার পরিকল্পনা, হামলায় পাকিস্তানের আইএসআইয়ের ভূমিকা এবং হামলার নেপথ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন লশকর-ই-ত্যায়বার যোগসূত্র কতটা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।