কর্নাটকের প্রাক্তন পুলিশপ্রধান ওম প্রকাশকে খুনের সন্দেহ গ্রেফতার তাঁর স্ত্রী পল্লবী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কর্নাটক পুলিশের প্রাক্তন ডিজি ওম প্রকাশকে খুনের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী পল্লবীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নিজের বাড়ি থেকেই অভিযুক্তকে ধরা হয়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার দয়ানন্দ জানিয়েছেন, এই খুনের মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় অপরাধ দমন শাখাকে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে তদন্তের দায়িত্ব নেবে। তবে তার আগেই পল্লবীকে গ্রেফতার করা হল।
রবিবার বেঙ্গালুরুর বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় ৬৮ বছরের ওমের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পেটে, বুকে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল তাঁর। এই খুনের মামলায় সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন ওমের স্ত্রী। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই রবিবার রাত থেকে টানা পল্লবী এবং ওমের কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বাবার খুনের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওমের পুত্র কার্তিকেশ। তাঁর দাবি, মা পল্লবী এবং বোন কৃতীই প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে খুন করেছেন। তাঁকে আগেও খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
কার্তিকেশ পুলিশকে জানিয়েছেন, মা এবং বোনের থেকে খুনের হুমকি পাওয়ার পরই বাড়ি ছেড়ে নিজের বোনের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন ওম। মৃত্যুর দু’দিন আগে তাঁকে বুঝিয়েসুঝিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছিলেন কৃতী। নিজের বাড়িতে ফিরতে রাজি ছিলেন না ওম। মেয়ের জোরাজুরিতেই ফিরে এসেছিলেন। কার্তিকেশের কথায়, ‘‘আমার মা এবং বোন মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন। প্রায়ই বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন তাঁরা। আমার দৃঢ় সন্দেহ, ওরাই আমার বাবার খুনের সঙ্গে জড়িত।’’
সূত্রের খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে পল্লবীর বিভিন্ন মানসিক সমস্যা ছিল। বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি করতেন তিনি। এমনকি, তাঁকে গালিগালাজ করতেও শুনেছেন প্রতিবেশীরা। অনেক সময় তাঁরা এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। কার্তিকেশ জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কর্নাটক গল্ফ অ্যাসোসিয়েশনে ছিলেন। তখন এক প্রতিবেশী তাঁকে ফোন করে জানান, ওমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাঁর শরীরে একাধিক ছুরির আঘাত রয়েছে। সোমবার সকালে একটি ভাঙা বোতল এবং একটি ছুরি পাওয়া গিয়েছে। কার্তিকেশের অভিযোগ, মাস কয়েক আগে পল্লবী তাঁর বাবাকে পাথর ছুড়ে আঘাত করেন। তাতে তিনি আহত হয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীর দিকে প্রথমে লঙ্কার গুঁড়ো ছুড়েছিলেন পল্লবী। তার পরে তাঁকে বেঁধে ভাঙা কাচের বোতল দিয়ে কুপিয়েছিলেন। স্বামীকে খুনের কথা অন্য এক পুলিশকর্তার স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন পল্লবী। ওই মহিলা তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানান। তার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ওম প্রকাশ আদতে বিহারের বাসিন্দা। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কর্নাটকের ডিজিপি হয়েছিলেন।