বাঁ দিক থেকে, উদ্ধব ঠাকরে এবং একনাথ শিন্ডে। — ফাইল চিত্র।
উদ্ধব ঠাকরের গোষ্ঠীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-সহ ৩৯ জন ‘বিদ্রোহী’ শিবসেনা বিধায়ককে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। নোটিসে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন ২০২২ সালের জুন মাসে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ করা হবে না। দু’সপ্তাহ পরে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারডিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হবে।
গত ১০ জানুয়ারি মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার তথা বিজেপি বিধায়ক নারওয়েকর তাঁর ‘রায়’ ঘোষণা করে জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীই ‘আসল শিবসেনা’। তাই উদ্ধব ঠাকরের কোনও আইনি ক্ষমতাই নেই শিন্ডে-সহ ১৬ ‘প্রথম দফার বিদ্রোহী’ বিধায়ককে বহিষ্কারের। স্পিকার নারওয়েকরের সেই সিদ্ধান্তকে গত ১৫ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল উদ্ধব শিবিরের তরফে। তারই জেরে এই নোটিস।
প্রসঙ্গত, শিবসেনার ভাঙনের মধ্যে দিয়ে ২০২২-এর জুনে উদ্ধব সরকারের পতন হয়েছিল। কুর্সিতে বসেছিলেন শিন্ডে। সেই সময়ে দলের অধিকারের দাবি করতে গিয়ে দু’পক্ষই অন্য শিবিরের বিধায়কদের পদ খারিজের আবেদন করেছিল আদালতে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের তরফে প্রথমে এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। শিবসেনার ভাঙনপর্বের সময়ই শিন্ডে-সহ ১৬ শিবসেনা বিধায়ককে ‘অবস্থান’ স্পষ্ট করতে ২০২২ সালের জুন মাসে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত স্পিকার (ডেপুটি স্পিকার) তথা এনসিপি বিধায়ক নরহরি সীতারাম জিরওয়াল।
কিন্তু সে সময় কিন্তু শিন্ডে শিবির জানিয়েছিল, ডেপুটি স্পিকারকে সরানোর জন্য আগেই বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করেছেন তাঁরা। তাই তাঁর কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার নেই। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে হাতিয়ার করেছিল শিন্ডেসেনা। এর পরে ২০২৩ সালের ১১ মে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, শিন্ডে-সহ ১৬ বিধায়কের পদ বহাল থাকবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার।
অবশ্য তার আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ শিবসেনা বিধায়ক শিন্ডেশিবিরে যোগ দেন। তাঁদের সমর্থন নিয়ে এনসিপি বিধায়ক জিরওয়ালকে সরিয়ে স্পিকার হন বিজেপির নারওয়েকর। নির্বাচন কমিশনও ‘শিবসেনা’র নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকার দেয় শিন্ডে শিবিরকে। তবে শিন্ডেদের ‘আসল শিবসেনা’র মর্যাদা দিলেও স্পিকার উদ্ধব অনুগামী ১৭ বিধায়কের পদ খারিজ করেননি। শিন্ডেসেনার তরফে স্পিকারের সেই সিদ্ধান্তকে গত ১৫ জানুয়ারি বম্বে হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।